বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের বড়বাজার হাটচান্নির ফেনন্সি মার্কেটের আপন দুই ভাইয়ের উপার্জনের সম্বল ছিলো মেসার্স শফি এণ্ড সন্স এবং যশোর ফিশ হাব সেন্টার। আনোয়ার হোসেন মধু ও শফিয়ার রহমান দুই ভাই মিলে ব্যবসা করতেন এই মার্কেটে। সুতা, সুই ও বর্শির মাছ ধরার জালসহ অন্যান্য সরঞ্জামসহ বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করতেন তারা। অনেক কষ্ট করে জমানো টাকা দিয়ে এ দোকান সাজিয়ে ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে লাগা আগুনে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। এ আগুনে পুড়ে ছাই হলো আপন দুই ভাইয়ের স্বপ্ন।
মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের বড়বাজার হাটচান্নি এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার সময় আগুনের সূত্রপাত হয়ে তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আতস্ক ছড়িয়ে পড়ে বাজারের দোকানীদের মধ্যে। শত শত দোকান মালিকের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হয়। মূহূর্তের মধ্যে এ আগুনে সুতা ও ছিপের সরঞ্জাম বিক্রির প্রতিষ্ঠান মেসার্স শফি এণ্ড সন্স এবং যশোর ফিশ হাব সেন্টার সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর দুইটার দিকে চুড়িপট্টিতে ইব্রাহিম হোসেনের দোকানে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। এ সময় আগুনের ফুলকি ছুটে গিয়ে পাশের দোকানে লাগে। ফ্যানের বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পুড়ে যায় মেসার্স শফি এণ্ড সন্স এবং যশোর ফিশ হাব সেন্টার। মুহূর্তের মধ্যে আপন দুই ভাইয়ের সব স্বপ্নপুড়ে ছাই হয়ে যায়।
পুড়ে যাওয়া নিজ দোকানের সামনেই মাথায় হাত দিয়ে নির্বাক দৃষ্টিতে দেখছিলেন আনোয়ার হোসেন। জিজ্ঞেস করতেই বুকের ভেতর লুকানো কষ্ট আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি এ ব্যবসায়ী। তিনি জানান, আমাদের সব স্বপ্নপুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অনেক কষ্ট করে এ দোকানটি দিয়েছেন। অনেক টাকা ধারও এখনো রয়ে গেছে। দোকান সব মাল পুড়ে শেষ। ক্যাশেও নগদ টাকা ছিল। সেই টাকাও পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, পাশের দোকানে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করার অসাবধানতাবশত এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। চোখের পলকেই দুটি দোকান পুড়ে শেষ। তারা জানান, আপন ভাইয়ের মালিকানাধীন দুটি দোকানের প্রায় সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
বাজারের ব্যবসায়ীরা আরও জানান, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করা না গেলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। পরে, আগুনে পোড়া দোকান পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার রওনক জাহান।