বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের চৌগাছায় উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে তিনদিনের গুড় মেলা। শুক্রবার সমাপনী দিনে গাছিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা হয়েছে। চৌগাছা পরিষদ চত্বরে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত গুড় মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি। সমাপনী অনুষ্ঠানে শ্রেষ্ঠ গাছিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।
এ বছর মেলায় প্রথম পুরস্কার দশ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন স্বরুপদাহ ইউনিয়নের সাঞ্চাডাঙ্গা গ্রামের গাছি আব্দুর রাজ্জাক। দ্বিতীয় পুরস্কার সাত হাজার টাকার চেক পেয়েছেন পাতিবিলা ইউনিয়নের গাছি আবুল গাজি। তৃতীয় পুরস্কার পাঁচ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের গাছি মিজানুর রহমান। ১১ টি ইউনিয়নের শ্রেষ্ঠ ১১জন গাছিকেও পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মেলায় অংশগ্রহণকারি সকল গাছিদের বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি বলেন, খেজুর গুড় যশোরবাসীর নিজস্ব শিল্প। যশোর জেলা খেজুর গুড় ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। সারা দেশে যশোরের খেজুর গুড়ের চাহিদা রয়েছে। নির্ভেজাল খেজুর গুড়ের নিশ্চয়তা দিতে হবে। বিলুপ্ত প্রায় গুড় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন নতুন গাছি তৈরি করতে হবে।
প্রধান অতিথি নাসিমুল গণি আরও বলেন, চৌগাছার মানুষ গুড় শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে মেলার আয়োজন করেছে। আমি এই উপজেলারই একজন। এজন্য আমি এখানে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। মেলায় আগত গাছিরা তাদের উৎপাদিত খাঁটি গুড় ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করার জায়গা পেয়েছে। আবার ক্রেতারাও খাঁটি গুড় কিনতে পারছেন। গুড় ক্রেতা ও বিক্রেতার এই ঠিকানা ‘গুড় মেলা’ আরো আকর্ষণীয় করার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন তিনি।
সমাপনি অনুষ্ঠানের সভাপতি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার বলেন, যশোর থেকে কৃষি পণ্যবাহি বিশেষ ট্র্রেনে দেশের রাজধানীতে যশোরের খেজুর গুড় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে। যাতে এই জেলার মানুষ খুব সহজেই গুড় ঢাকায় পৌঁছাতে পারে।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আ.খ.ম কবিরুল ইসলাম, খুলনা রেঞ্জের ডি.আই.জি রেজাউল হক, যশোর জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা প্রমুখ।
শুক্রবার মেলার শেষ দিনেও ছিল দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। শেষ সময়ে একটু কম দামে গুড় কিনতে এসেছেন অনেকেই। তবে মেলার জমজমাট সমাপনী অনুষ্ঠানে নজর ছিল বেশিরভাগ দর্শনার্থীর। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তৃতীয়বারের মত গুড় মেলার শেষ দিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।