বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ফুটপাত দখল, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং যানজট নিরসনে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। যশোরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী নিজে উপস্থিত থেকে ওই অভিযান পরিচালনা করেন। শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের চৌরাস্তা থেকে দড়াটানা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ফুটপাত দখলে রেখে হোটেল, খাবার দোকান ও অবৈধ পার্কিং উচ্ছেদ করা হয়। একই সাথে এসব ব্যবসায়ী ও অবৈধ দখলদারদের সতর্কও করা হয়। এদিকে, এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে শহরবাসী। তবে অভিযানের কয়েকদিনের মধ্যেই আবারও ফুটপাত ও রাস্তা ফের যাতে দখল না হয় সেদিকেও প্রশাসনকে নজর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফুটপাত পথচারীদের জন্য নির্বিঘ্ন করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা পুলিশ প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে যশোর শহরের তীব্র যানজটের কারণে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাসহ বিভিন্ন সভায় আলোচনা হয়। এর প্রধান কারণ হিসেবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এলাকায় ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা বা দোকান বলে চিহ্নিত হয়। এরপরই পুলিশ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। এছাড়া আসন্ন রমজান উপলক্ষে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভায়ও ফুটপাত দখল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার তাগিদ দেন জেলা জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম। শনিবার বিকেলে শহরের চৌরাস্তা থেকে অভিযান পরিচালনা করে জেলা পুলিশ। সড়কের পরে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে। অবৈধভাবে পার্কিং করা যানবাহনও রেকার করে জব্দ করেছে পুলিশ। এর পর শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানাতে সড়ক ও ফুটপাট দখল করা বিভিন্ন খাবার দোকান, হোটেল উচ্ছেদ করে।
ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, ‘যশোরবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আইন সমানভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে দখল করে কেউ ব্যবস্থা করতে পারবে না। বৈধভাবে ব্যবস্থা করলে পুলিশ তাদের সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, শহরকে যানজটমুক্ত করতে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এই অভিযান। এ সময় তিনি ফুটপাত দখলে রাখা ব্যবসায়ীদের তাদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। এক্ষেত্রে আমরা ব্যবসায়ীদের বলবো তারা স্ব উদ্যোগে তাদের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিয়ে যাক। এর ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে পুলিশ কঠোর হবে বলেও তিনি জানান। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে যশোর শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ফুটপাত দখল করে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসা করে আসছেন। এসব দোকান থেকে রাজনৈতিক সরকারের আমলে প্রভাবশালীদের পক্ষ থেকে নিয়মিত ভাড়া তুলে খাওয়ারও নজির রয়েছে। আবার কোনো কোনো সময়ে সমালোচনার মুখে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হলেও পরবর্তীতে আবার দখল হয়ে যাওয়ার নজির রয়েছে। তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ায় সেটি কতটা বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে সচেতন মহলের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।