বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে হারুণ-অর রশিদ, সিরাজুল ইসলাম ও মনোয়ারা খাতুন নামে তিন ভাই বোনকে নানা বাড়ির কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। শহরের বারান্দীপাড়া মৌজায় ৫৮ দশমিক ৮৮ শতক জমি ফাঁকি দেয়ার দাবি করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের নানা অমেদ আলীর মৃত্যুর পর জমি দেখভালের দায়িত্বে পাওয়া মামাতো ভাই ও তার সন্তানেরা কৌশলে এ ফাঁকি দিয়েছেন বলে তারা মামলা করেছেন।
মামলা সূত্র মতে, যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের বাসিন্দা হারুণ-অর-রশিদ ও সিরাজুল ইসলাম এবং তাদের বোন মনোয়ারা খাতুনের নানা বাড়ি বারান্দীপাড়ায়। তাদের মা আনোয়ারা খাতুন মারা যান নানা অমেদ আলীর মৃত্যুর আগেই। ফলে নানার কাছ থেকে তখন তারা সম্পদ বুঝে পাননি। পরবর্তীতে নানা ওমেদ আলী মারা যাওয়ায় সম্পদ দেখাশোনা করতেন তাদের মামা আব্দুর রশীদ বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা। সে সময় ফসলসহ অন্যান্য সুবিধা পেতেন হারুণ-অর-রশিদ, সিরাজুল ইসলাম ও মনোয়ারা খাতুন। এরই মধ্যে তাদের মামা আব্দুর রশীদ বিশ্বাস মারা যান। তখন থেকে আত্মীয়দের মধ্যে দূরত্ব শুরু হয়। মামাতো ভাইয়ের ছেলে মহিবুর রশীদ আকাশ, মুশফিকুর রশীদ মননা, মারুফুর রশীদ রাহি, মেয়ে রুম্পাসহ অন্যরা তাদের এড়িয়ে চলতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা জানতে পারেন নানা বাড়ির সম্পত্তি মায়ের (মৃত আনোয়ারা খাতুন) সূত্রে তারা ওয়ারেশ হলেও ফাঁকি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় তারা আপোষ-মীমাংসার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সম্পত্তি ফিরে পাননি।
প্রসঙ্গত, যশোর পৌরসভা থেকে তদন্ত করে ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট যে প্রতিবেদন দেয়া হয় সেখানে মৃত অমেদ আলীর বিশ্বাসের মেয়ে আনোয়ারা বেগমের তিন সন্তান হারুণ-অর-রশিদ, সিরাজুল ইসলাম ও মনোয়ারা খাতুনের ওয়ারেশ হিসেবে তথ্য রয়েছে। কিন্তু সম্পত্তি থেকে ফাঁকি দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, প্রথম দিকে সম্পত্তি দেয়া হবে বলা হলেও পরবর্তীতে অস্বীকার করা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় আপোষ মীমাংসা করে সময়ক্ষেপণ করা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে আশ্রয় নেন। মামলা এখনো চলমান রয়েছে। কিন্তু দখলদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় আদালত থেকে ন্যায্য বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছেন।
ভুক্তভোগী হারুণ-অর-রশীদ বলেন, বণ্টননামা হিসেবে আমরা তিনভাই বোন ৫৮.৮৮ শতক জমি পাই। যার বর্তমান মূল্য ৭ কোটি টাকা। স্থানীয়ভাবে ও আত্মীয়-স্বজনদের বলে নানা বাড়ির সম্পত্তি পাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা দেয়নি। তিনি আরো দাবি করেন, বিবাদী মহিবুর রশীদ (আকাশ) এক সময় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। এখন আওয়ামী লীগ করেন। বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় আকাশ প্রভাব বিস্তার করে জমির দিকে তাকাতে দেয়নি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মহিবুর রশীদ (আকাশ) বলেন, মামলার বিষয়টি নিয়ে তার ছোট ভাই মুশফিকুর রশীদ মুননা ভালো বলতে পারবেন। আর মুশফিকুর রশীদ মুননা বলেন, যারা মামলা করেছেন তাদের আমরা চিনি না। যে কেউ মামলা করতেই পারে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।