বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ভূমি সেবা অটোমেশন বিষয়ক চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের পথ নকশা নিয়ে মঙ্গলবার সকালে যশোরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারের শুরুতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের চার্জ অফিসার নারায়ণ চন্দ্র পাল। তিনি আধুনিক ভূমি সেবা ও চলমান কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
মুক্ত আলোচনায় উঠে আসে ভূমি সেবার বিভিন্ন দিক। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভূপালী সরকার বলেন, একজনের জমির খাজনা অন্যজনের দেওয়া, জাল দলিল রিট করা, এবং এনআইডি কার্ড ও মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশনের মতো বিষয়গুলো ভূমি সেবায় জটিলতা তৈরি করছে। তিনি এই সমস্যাগুলো নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ভূমি সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতার কথা উল্লেখ করে বলেন, সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং মানুষের জমি বদল হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান বলেন, জমি কিনছে একজন, কিন্তু অন্যজন নকশা তৈরি করে দাগ-খতিয়ান তৈরি করছে, যা মানুষের ভোগান্তির কারণ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমরা ভূমি সেবা ডিজিটালাইজেশন করছি মানুষের ভালোর জন্য। তবে মানুষের খারাপ চিন্তা-ভাবনার কথা তো মেশিন বুঝতে পারে না। মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের বড় সমস্যা হয় আমরা নিজেরা নিজেদের জমির দাগ-খতিয়ান জানি না। অনেক কৃষক নিরক্ষর, তারাও জানেন না। যে কারণে দালাল চক্র সুযোগ পায়। রাষ্ট্র যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে, অপরাধী তার চেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। আমরা ডিপি, এপি, খাসসহ বিভিন্ন সমস্যা তো মোকাবেলা করছি। নির্দিষ্ট লোক থাকা উচিত যারা ভূমি সংক্রান্ত সেবা অনলাইনে দিবে। সাথে সাথে নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট ফিস থাকতে হবে।
সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা ভূমি সেবাকে আরও জনমুখী, স্বচ্ছ এবং দ্রুত করতে বিভিন্ন প্রস্তাবনা দেন। ভূমি সেবা অটোমেশনের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে কার্যকর সমাধানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবের ওপর জোর দেওয়া হয়।