প্রতীক চৌধুরী
এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ইংরেজি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী ফেল করেছে। অন্যান্য বিষয়ে পাসের হার ৯০ শতাংশের হলেও ইংরেজিতে পাস করেছে মাত্র ৬৮ শতাংশ। ইংরেজি বিষয়ে বেশি ফেল করায় সামগ্রিক ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। গত বছরও ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছিল।

এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯ ভাগ; জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। গতবছর পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮ ভাগ; জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত ফলাফলে যশোর বোর্ডের ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে।

যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৬ হাজার ২৪৭ জন এবং ছাত্রী ৪২ হাজার ৫১৭ জন। পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন। বহিস্কৃত হয়েছে ১৩ জন। ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ড থেকে এক লাখ ৯ হাজার ৬৩৪ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৭৬ হাজার ৬১৬ জন। উত্তীর্ণদের মধ্যে ছাত্র ৩৫ হাজার ৮৮৫ জন এবং ছাত্রী ৪০ হাজার ৭৩১ জন। পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৮৮। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৮ হাজার ১২২ জন। বহিস্কৃত হয়েছিল ২৭ জন।

এবারের ফলাফলের চিত্র তুলে ধরে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড’র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ জানান, অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় যশোর বোর্ডর ফলাফল খারাপ হয়েছে। বিশেষ করে ইংরেজি পরীক্ষায় ৩১ শতাংশ অনুত্তীর্ণ হওয়ায় সার্বিক ফলাফলের ওপর এর প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, প্রাইমারি ও হাইস্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে সাধারণত অত বেশি উন্নতি করতে পারে না। কলেজপর্যায়ে এসে ইংরেজিতে ভালো করে শেখে। কিন্তু এবার শিক্ষার্থীরা সময় পেয়েছে মাত্র ১৬ মাস। এই অল্প সময়ে ১৩টি বিষয়ে পড়াশোনা এবং শেখা খুবই দুরূহ কাজ। তা ছাড়া এবারের শিক্ষার্থীরা ২০১৯ সালে জেএসসি পাস করে। ২০২০ সালে মহামারি করোনার কারণে তারা সশরীরে প্রায় দেড় বছর ক্লাস করতে পারেনি। কিছু ক্লাস করেছে অনলাইনে। গত বছরও ইংরেজিতে শিক্ষার্থীরা খারাপ করেছিল। এবার অন্যান্য বিষয়ে পাসের হার ৯০ শতাংশের হলেও ইংরেজিতে পাস করেছে মাত্র ৬৮ শতাংশ। ইংরেজিতে খারাপ ফলাফল সামগ্রিক ফলাফলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।’

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘এবার শিক্ষার্থীরা ৭টি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমরা সেগুলো মূল্যায়নের পাশাপাশি বাকি ৬টি বিষয়ের মূল্যায়ন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ম্যাপিং করে দিয়েছি।’

এ বিষয়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফল নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপর। এবারের ফলাফল তুলনামূলকভাবে খারাপ। ভালো ফলাফলের জন্যে এই তিন পক্ষকেই উদ্যোগী হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বলবো, আপনারা আপনাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুন। আপনাদেরই বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। যেসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা খারাপ করছে, সেইসব শিক্ষকদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন করার পরামর্শের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হবে। ছেলেমেয়েদের পড়ার প্রতি আরও বেশি আগ্রহী হওয়ার প্রয়োজন।’

Share.
Exit mobile version