বাংলার ভোর প্রতিবেদক

যশোরের ঝিকরগাছায় স্পেন প্রবাসী এক নারী খুন হয়েছে। শিশুকন্যা জান্নাতুল মুমূর্ষ অবস্থায় যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নিহত নারী নির্বাসখোলা ইউনিয়নের নওয়ালি বাজারের স্পেনের বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের স্ত্রী ফেরদৌসী আলতাফ (স্পেন বাসিন্দা) (৫২)। তাদের ৩ সন্তানসহ তারা সকলেই স্পেনের বাসিন্দা। ধারণা করা হচ্ছে, এটা কি চুরির উদ্দেশ্য ছিল? নাকি শুধুই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য। পুলিশ বলছে,আমরা যে তথ্য পেয়েছি তার ভিত্তিতেই খুব দ্রুতই হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।

রোববার (১৪জুলাই) সকাল সাড়ে সাতটায় সরেজমিনে গেলে নির্বাসখোলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নওয়ালি গ্রামের মেম্বার হাবিবুর রহমান জানান , রবিবার ফজরের আযানের সময় শুনি আমার আত্মীয় স্পেন প্রবাসী খুন হয়েছেন। ঘটনাস্থলে এসে জানতে পারি, রাত অনুমান দুইটার দিকে চোরেরা রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় চোরদের উপস্থিতি টের পান গৃহকর্তী ফেরদৌসী আলতাফ (৫২)তাদের চিনে ফেলে। এরপর চোরেরা গৃহকর্তী ফেরদৌসী আলতাফকে ছুরিকাঘাত করে। একই বিছানায় শুয়ে থাকা তার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল (১ ১) তা দেখে ফেলে।

এরপর চোরেরা তাকেও ছুরিকাঘাত করে। জান্নাতুল দ্রুত গেট খুলে বাইরে গিয়ে চিৎকার শুরু করে। আশপাশের আত্মীয়স্বজনরা দ্রুত গঠনস্থলে পৌঁছালে চোরেরা পালিয়ে যায়। কিন্তু নিহতের হাতে থাকা দুই ভরি ওজনের দুইটি চুড়ি রেখে যায়। স্বজনেরা ঝিকরগাছা থানায় খবর দিলে দ্রুতই থানা থেকে পুলিশ চলে আসে। এদিকে আহত জান্নাতুল কে আত্মীয়স্বজনেরা ওই রাতেই দ্রুত যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। জান্নাতুল এর বাম হাতের বগলের নীচে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে ডাক্তার জানিয়েছেন। তবে জান্নাতুল শংকামুক্ত নয়। জান্নাতুল নাওয়ালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী।
নিহতের চাচাতো ভাই জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, আমার বোন দুলাভাইদের কোন শত্রু ছিল না। কেন এমন হলো সেটাই জানিনা।

নিহতের স্বামী আলতাফ হোসেন এবং তার বড় ছেলে আহসান কবির হৃদয় বর্তমানে স্পেন রয়েছেন।দুর্ঘটনার রাতে ওই বাড়িতে ৯০ বছরের শ্বশুর আয়ুব হোসেন ঘুমিয়েছিলেন। ছোট ছেলে স্পেনের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান (১৩) নওয়ালি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ছিলো। ৬ মাস আগে বড় ছেলের বিয়ে হওয়া পুত্রবধূ তার পিত্রালয় কৃষ্ণনগরে ছিলেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ৪ বিঘা জমির উপর প্রাচীর বেষ্টিত কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা বাড়ি। পুকুরের পাশ দিয়ে চোরেরা বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে এবং রান্নাঘরের গ্রীল কেটে ঘরের ভিতরে যায়। চোরেরা যদি চুরি করবে তাহলে কোন কিছুই তারা নেইনি। এমনকি নিয়াতের হাতে ২ ভরি ওজনের দুটি চুড়িও নেয়নি। তাহলে চোরেরা কি চুরির উদ্দেশ্যে এসেছিল? নাঅকি হত্যার উদ্দেশ্যে এসেছিল? এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।

প্রাথমিক তদন্তকারী উপসহকারী পুলিশ পরিদর্শক দেবব্রত জানান, নিহত ফেরদৌসী আলতাফের বুকে গলায় এবং হাতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বিএম কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, আমরা ইতিমধ্যেই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ব্যাপারে অনেক তথ্য পেয়েছি।

পুলিশের নাভারণ সার্কেলের এএসপি নিশাত আল নাহিয়ান জানান, তদন্তের স্বার্থে অনেক কথাই এখন সাংবাদিকদের জানানো যাবে না। অচিরেই আমরা আসামিদেরকে ধরতে সক্ষম হবো।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মরদেহ যশোর সদর হাসপাতালে পোস্ট মর্টেমের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version