সাতক্ষীরা প্রতিবেদক

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা সাতক্ষীরা পৌরসভার রাস্তাঘাট নির্মাণ, চিকিৎসা বাবদ ও বিভিন্ন তহবিলের নামে কোটি কোটি টাকার হরিলুটের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল ১২ টার সময় সাতক্ষীরা পৌরসভা মিলনায়তনে গণশুনানি ও সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি বলেন, আমি একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হওয়ার কারণে মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে বারবার আমাকে সম্পূর্ণ বেআইনি ও অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমি দেশের বাইরে থাকা অবস্থায়ও তথাকথিত মিথ্যা ও বানোয়াট নাশকতা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

মেয়র বলেন, আমি কাউন্সিলরদের অনৈতিক দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে জোটবদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে বারবার মিথ্যা অভিযোগে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আমাকে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। আমি ধানের শীষের মেয়র হওয়ার কারণে জাতীয়ভাবে উন্নয়নমূলক বরাদ্দ হতে সাতক্ষীরা পৌরসভা বঞ্চিত হয়েছে তারপরও আমি ব্যক্তি চেষ্টায় সকলের সহযোগিতায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে অবকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা করেছি।

আমার কর্মকালের বেশিরভাগ সময় জেল, জুলুম ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে, বিধায় পৌর এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে ন্যুনতম যেটুকু সময় প্রয়োজন আমি তা পাইনি।

মেয়র বলেন, আমি সরকার কর্তৃক বেআইনিভাবে বরখাস্ত হওয়ার পর বারবার মহান হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ হতে স্থগিতাদেশ নিয়ে আমাকে আইনগতভাবে দায়িত্ব পালন করার সুযোগ থাকলেও প্রশাসন দিয়ে আমাকে অত্যাচার করে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমুদ্দিনের যোগসাজশে ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান আমাকে পৌরসভায় প্রবেশ করতে না দিয়ে জোর করে মেয়রের (আমার )কার্যালয় দখল করে। আইনের তোয়াক্কা না করে নিজেকে স্ব-ঘোষিত ভারপ্রাপ্ত মেয়র দাবি করে এবং পৌর অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জিম্মি করে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি করে।

মেয়র তাজকিন আহমেদ বলেন, শহরে ইজিবাইক চলাচলের জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৩০০ (তিনশত) টি স্ট্রিট লাইট স্থাপনে খরচ দেখিয়েছে ৩২ লাখ ৬৫ হাজার, শিল্পকলা একাডেমিতে এলএইডি ডিসপ্লে স্পটলাইট বাবদ ২০ লাখ, পৌরসভার অভ্যন্তরে বিচারকক্ষ নির্মাণে ১৭ লাখ ৪৬ হাজার, পৌরসভার ভিতরে ফুলের বাগান করতে ১৯ লাখ ৯৫ হাজার, পৌরসভার মনিটরিং সিস্টেম এবং ড্রাইভারদের ট্রেনিং সেন্টারের জন্য ২৫টি ল্যাপটপ ক্রয় করেছেন ৩০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
মেয়র আরও বলেন, আমার কর্মদিবসে পৌরসভায় ফাণ্ড ছিল, ৯ কোটি ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৮৮৪ টাকা। আজকে ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট পর্যন্ত পৌরসভার ফাণ্ড দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা।

আমি যে ফাণ্ড রেখে গিয়েছি তা থেকে ২ কোটি টাকা লুটপাট করে ফেলেছে তারা। এছাড়া পৌরসভার বাড়ির প্ল্যান পাস করার জন্য নাগরিকদের নিকট থেকে কাউন্সিলর কাজী ফিরোজ হাসান জোর করে ১ লাখ টাকা চাদা আদায় করে লুটপাট করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, পৌরসভার ১০ টি পদে স্থায়ী কর্মকর্তা নেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কাজী ফিরোজ হাসান ও সিইও নাজিমউদ্দিন কোটি টাকা বাণিজ্য করার চেষ্টা করেছিল। সাংবাদিকদের লেখনীর কারনে সেই বাণিজ্যের নিয়োগ স্থগিত হয়।

পৌর মেয়র চিশত আরো বলেন, পৌরসভার সিইও নাজিমুদ্দিন একটি পবিত্র জায়গায় বসে মদ পান করতো। তার অত্যাচারে পৌরবাসী অতিষ্ঠ ছিল। দূর্নীতির ফিরিস্তি এখানেই শেষ নয়, আমার অনুপস্থিতিতে কাজী ফিরোজ হাসান ও সিইও নাজিমউদ্দিনের নেতৃত্বে রাস্তাঘাট নির্মাণ, চিকিৎসা বাবদ, অবকাঠামো উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে।

এই দুর্নীতির সকল টাকা ফেরত দিতে হবে। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে বলে জানান মেয়র। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ও পৌরসভার নাগরিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Share.
Exit mobile version