বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীকে ওয়ার্ডের বেডে হস্তান্তরকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজনদের মারপিট করেছেন হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ও বহিরাগত একটি ক্লিনিকের কর্মচারী। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সাধারণ শিক্ষার্থী জেসিনা মূর্শীদ ও মাসুম বিল¬াহসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী হামলাকারীদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। এরপর যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। বুধবার সকাল ৮টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে এ মারামারি ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রোগীর স্বজন যশোর সদর উপজেলার দাইতলা গ্রামের রিপন হোসেন (৪৫) এবং তার স্ত্রী আঞ্জুমানারা বেগম (৩৫)। হামলাকারীরা হলেন- যশোর জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় আসাদুজ্জামান (৫০) এবং ল্যাবস্কান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারী জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫)।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর স্বজন রিপন হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বুধবার ভোর ৫টার দিকে আমার মেয়েকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করি। ভেতরে বেড খালি না থাকায় ওয়ার্ডের বাইরে ফ্লোরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ওয়ার্ডের ভেতরে বেড খালি হলে সেই বেডে আমার মেয়েকে নেওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় আসাদুজ্জামান এসে আমাদেরকে বাধা দেয় এবং বলে এই বেডে তার রোগী উঠবে। আগে থেকে নাকি বেড ঠিক করা রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় আসাদুজ্জামান রিপন হোসেনকে কিল ঘুষি দেয় একই সাথে রিপনের স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাকেও মারপিট করে আসাদুজ্জামান। ওয়ার্ড বয় আসাদুজ্জামানের সহযোগী জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে এসে পুনরায় রিপন হোসেনের উপর চড়াও হয় এবং তাকে মারপিট করে।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই শিক্ষার্থী জেসিনা মূর্শীদ প্রাপ্তি ও মাসুম বিল্লাহ জানান, আমরা খবর পাওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে যাই এবং মারধরের শিকার রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনি। এরপর পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনায় জড়িত দুই হামলাকারীকে আমরা পুলিশে সোপার্দ করি। আমরা এ ঘটনা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। একটা হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় রোগীর স্বজনদের মারধর করবে এবং মহিলার গায়ে হাত তুলবে এটি একটি বড় ধরণের অপরাধ।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘হাসপাতালের মধ্যে মারামারির ঘটনায় ওয়ার্ড বয়কে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা বা অভিযোগ হলে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্ড বয় যেহেতু এক মহিলাকে মারপিট করেছে, এটি একটি বড় অন্যায়। থানা পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নিলে আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘যশোর জেনারেল হাসপাতালে মারামারির ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি ছাত্ররা দেখছে। আমার কাছে এখনো কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।’

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version