বাংলার ভোর প্রতিবেদক

যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খালেদা খাতুন রেখার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ।

আগামী ২৫ জুন খুলনা বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয়ে খালেদা খাতুন রেখা ও অভিযোগকারীদের উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি ইস্যু করেছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ফিরোজ শাহ।

যশোরের এডিসি ও কেশবপুর ভালুকঘর ফাযিল মাদ্রসার সভাপতি খালেদা খাতুন রেখার বিরুদ্ধে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন একই মাদরাসার গভর্ণিং বডির দাতা সদস্য ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা, নির্বাচিত অভিভাবক সদস্য হায়দার আলী, মানজুরুল ইসলাম ও মাদ্রসার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ।

চলতি বছরের ৩১ মার্চ এডিসির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, প্রতিষ্ঠানের অর্থ তছরুপ, ক্ষমতা অপব্যবহার এবং জালিয়াতির মাধ্যমে গভর্ণিং বডি গঠনের অভিযোগ আনা হয়।

লিখিত অভিযোগকারী দাতা সদস্য ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা জানান, ওই মাদ্রসার অধ্যক্ষসহ ৪টি কর্মচারী পদে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ৫ মার্চ বৈধ প্রার্থীদের নামে প্রবেশ পত্র জারি করা হয়।

এর দুই দিন পর ৭ মার্চ ২০২৪ বৃহস্পতিবার নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সচিব মামলার কারণ দেখিয়ে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে নোটিশ জারি করেন। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

একদিন পর জানতে পারি গোপনে পাতানো বোর্ড বসিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। স্থগিতের নোটিশ দেয়ায় অনন্ত ৭ জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি।

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবিধান এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারিকৃত পরিপত্রে উল্লেখ আছে এনটিআরসি বহির্ভুত পদে নিয়োগ সংক্রান্ত কোন মামলা থাকলে নিয়োগ কার্যক্রম চালানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিজির প্রতিনিধি অনুমোদন দেয়া হবে না। এক্ষেত্রে চরম মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন সভাপতি।

তিনি তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে মিথ্যা হলফনামা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিজির প্রতিনিধি নিয়েছেন। অথচ যশোর সহকারী জজ ও চীফ জুডিশিয়াল আদালতে নিয়োগ সংক্রান্ত ৩টি মামলা চলমান রয়েছে। যার মামলা নং যথাক্রমে সিআর ৭৫/২৩, ৩৫৭/২৩ এবং ৫১/২৪।

ইসলামি আরবি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রবিধানে ১০ এর ৩ ধারা বলা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে থেকে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করতে পারবেন না। কিন্ত অত্র মাদ্রসার তৎকালী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাছিহুর রহমান স্বপদে থেকে আবেদন করেছেন এবং গভর্নিং বডির সভাও আহবান করেন।

পাতানো বোর্ডে সেই মাশিহুর রহমানকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার জন্য কমপক্ষে ১৫ দিন আগে বৈধ প্রার্থীদের ছবিসহ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের পত্র দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সেখানে নিয়মের ব্যতয় ঘটিয়ে ৮ মার্চ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ছবিবিহীন প্রবেশপত্র ছাড়া হয় (মাত্র দুইদিন আগে) গত ৫ মার্চ। অত্র প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি এবং সদস্য সচিব অন্যান্যদের সহায়তায় পাতানো নিয়োগ বোর্ড বসিয়ে মোটা দাগে অর্থ বাণিজ্য করেছেন। নিয়োগ বোর্ড গঠন ও নিয়োগ কার্যক্রম সংক্রান্ত কোন সভায় গভর্ণিং বডির অভিভাবক ও দাতা সদস্যদের ডাকা হয়নি।

কমিটি সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে ইব্রাহী হোসেন মোল্য বলেন, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে কমিটি সংক্রান্ত ইসলামিক আরবি বিশ^বিদ্যালয়ে দেয়া অভিযোগ এডিসি খালেদা খাতুন রেখার উপর তদন্ত ন্যাস্ত হয়।

তিনি একতরফাভাবে ওই তদন্ত করে অত্র প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হয়েছেন এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হওয়ার আগেই তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে অর্থ উত্তোলন করে তছরুপ করেছেন বলে দাবি করেছেন ইব্রাহীম হোসেন মোল্যা।

এ বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খালেদা খাতুন রেখা বলেন, ‘অভিযোগ মিথ্যা, তদন্তের বিষয়ে আমার জানা নেই।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version