বাংলার ভোর প্রতিবেদক

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মহড়া দিয়েছে। দেড় বছর পর বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ক্যাম্পাসে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার প্রচার মিছিলের নামে তারা মহড়া ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াসের নেতৃত্বে পুরো ক্যাম্পাসে মহড়া দেন নেতৃবৃন্দ।

জানা যায়,  ২৩ জুন স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হটিয়ে কলেজের শহীদ আসাদ হল দখলে নেয় শাহীন  চাকলাদারের  অনুসারীরা। ছাত্রাবাসটি দেড় বছর ধরে নাবিল অনুসারীদের দখলে ছিল। ক্যাম্পাসে এতোদিন আধিপত্যে বিস্তার বা কোন কর্মসূচি করতে পারেনি শাহীন অনুসারীরা। হল দখলের চারদিন পর নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটিয়ে শক্তির মহড়া দেখালো শাহীন অনুসারীরা বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। যদিও হল দখলের পর থেকে নাবিল অনুসারীদের আর ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অবস্থান নেন শাহীন অনুসারী হিসাবে পরিচিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে কলেজের শহীদ আসাদ হলের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মহড়া দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার প্রচার মিছিলের নামে এই কর্মসূচি পালিত হলেও মূলত এটি ছিলো শাহীন অনুসারীদের শক্তির মহড়া বলে করছেন শিক্ষার্থীরা। শহীদ আসাদ হল থেকে এই মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভাস্কর্য্যর সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, ‘এমএম কলেজের মাটি ছাত্রলীগের ঘাঁটি। যার নিন্ত্রয়ণ কর্তা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। এই ক্যাম্পাসে কেউ বিশৃঙ্খলা করতে এলে তাদের ছাড় দিবে না ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এই কলেজের শিক্ষার্থীরাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করবেন। কোন অছাত্র বহিরাগতদের এই ক্যাম্পাসে জায়গা দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, ক্যাম্পাস হল দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বড় ধরণের সহিংসার আশাঙ্কাও করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এমনকি আজ অনার্স চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মহড়া ও স্লোগানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয় আতংক।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার জানান, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার প্রচার মিছিল করেছি। কোন মহড়া দেওয়া হয়নি। এম এম কলেজে ছাত্রলীগের কোন কমিটি নেই। অছাত্র বহিরাগতরা ছাত্রলীগের নাম পরিচয় বহন করে হল দখলে রেখেছিলো। আমরা সরাসরি বলেছি, এই কলেজের শিক্ষার্থীরাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করবে। এখান থেকে আগামি নেতৃত্ব গড়ে তোলা হবে। ক্যাম্পাসে অপরাজনীতিদের জায়গা নেই।’

সরকারি এমএম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, ‘কলেজে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেনি। ছাত্রলীগের একটি পক্ষ কর্মসূচি করেছে। তবে ক্যাম্পাসে কেউ পরিবেশ নষ্ট করলে তাদের কারোও ছাড় নেই। ’

Share.
Leave A Reply

Home
News
Notification
Search
Exit mobile version