তালা সংবাদদাতা

সাতক্ষীরার তালায় শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হওয়া গৃহবধূ ও তার মাকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার রাতে উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শুভাষিনী এলাকার মিন্টু মলঙ্গীর বাড়ি থেকে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করা হয়। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান।

উদ্ধারকৃতরা হলেন শুভাষিনী মলঙ্গীপাড়ার মিন্টু মলঙ্গীর স্ত্রী নার্গিস বেগম (৪০) ও তার শাশুড়ি মহিফুল বিবি (৬০)। তারা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উদ্ধারের বিষয় নিশ্চিত করেছেন সেনাবাহিনীর তালা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ ক্যাম্প কমান্ডার মেজর কামরুল ইসলাম।

সেনাবাহিনীর কাছে দেয়া অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২৭ বছর আগে উপজেলার শুভাষিনী গ্রামের মলঙ্গীপাড়ার মিন্টু মলঙ্গীর সঙ্গে জেলার সদর থানার মুন্সীপাড়া এলাকার আব্দুল গফফার শেখের মেয়ে নার্গিস বেগমের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার মেয়েসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাতে নার্গিস বেগমের ওপর নির্যাতন করতেন শ্বশুর রহিম মলঙ্গী, শাশুড়ি ফিরোজা বেগম ও দেবর সেলিম মলঙ্গী।

গত বুধবার নার্গিস বেগমকে নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বৃহস্পতিবার তার মা বেড়াতে এলে তাকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে পাশের এক বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে নার্গিস বেগম তার ভাই রাসেল শেখের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তাদের উদ্ধারের আকুতি জানান।

রাসেল শেখ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তালা ক্যাম্প কমান্ডারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী মিন্টু মলঙ্গীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গৃহবধূ ও তার মাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন।

রাসেল শেখ জানান, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বোনের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। এর আগে তার বোনকে শারীরিক নির্যাতনের একপর্যায় মৃত ভেবে মুখে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করা হয়। ওই সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে সালিস বৈঠকে মাপ চেয়ে মুচলেকা দিয়ে রেহাই পায় মিন্টু মলঙ্গীর পরিবার।

রাসেল শেখ তার মা ও বোনের ওপর নির্যাতনের বিচার দাবি করেন।

মিন্টু মলঙ্গীর পরিবার পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সেনাবাহিনীর তালা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ ক্যাম্প কমান্ডার মেজর কামরুল ইসলাম জানান, রাসেল শেখ তার মা ও বোনকে আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে লিখিত অভিযোগ করেন।

এরপর শুক্রবার বিকেলে মিন্টু মলঙ্গীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার মা ও বোনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ সময় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে রাসেল শেখের বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান।

গুরুতর আহত মা ও বোনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পরিবারের মাধ্যমে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version