বাংলার ভোর প্রতিবেদক

যশোর ৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনের সাবেক এমপি রণজিত কুমার রায়ের জমির গাছ কেটে নিয়েছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই তিন নছিমন ভর্তি গাছ সরিয়ে ফেলেছেন অভিযুক্ত নেতারা। বাকি গাছ নারিকেলবাড়িয়া ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে জব্দ করে। রোববার বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে এ গাছ লুটের ঘটনা ঘটে। এর আগেও বন্দবিলা ইউনিয়নের সেকেন্দারপুর গ্রাম থেকে রণজিত রায়ের জমির গাছ কেটে নেয় স্থানীয় বিএনপি নেতারা।

জানা গেছে, বাঘারপাড়ার বিরামপুর গ্রামের কার্তিক বিশ্বাসের কাছ থেকে কয়েক বছর আগে সাবেক এমপি রনজিত কুমার রায় প্রায় এক একরের একটি মেহগনি বাগান জমিসহ ক্রয় করেন। ওই জমির গাছ বিএনপি নেতারা কেটে নিচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছকাটা লেবার ও নছিমন ড্রাইভাররা সেখান থেকে ভোদৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে সেখানে কোন বিএনপি নেতাদের দেখা যায়নি।

ঘটনাস্থলেই কথা হয় পাশের গ্রাম শ্রীরামপুরের বিএনপি নেতা কবির হোসেনের সাথে। তিনি জানান, রণজিত রায়ের জামির পাশেই তার মাতুল সম্পত্তি রয়েছে। সেই জমির গাছও কেটে নেয়া হচ্ছিলো। কবির জমিতে গিয়ে তার গাছ ঠেকান। কবির এ সময় দাবি করেন ওই গাছ লুটের সাথে জড়িত রয়েছে রায়পুর ইউনিয়নের নলডাঙ্গা গ্রামের সাবেক মেম্বর ইসার ছেলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানিয়েছেন, কবির যা বলছে, তার সবই মিথ্যা। নাটক সাজিয়ে ওই জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

জমির পূর্ব পাশেই কার্তিক বিশ্বাসের বাড়ি। সেখানে গিয়ে দেখা যায় কার্তিক বিশ্বাস অসুস্থতার কারণে শয্যাশায়ি। বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা গাছ কাটার বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারেনি। কথা হয় বিরামপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তির সাথে। কেউই ভয়ে মুখ খুলতে চান না। তবে দুই একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ধুপখালি গ্রামের যুবদল কর্মী চঞ্চল ও মালঞ্চি গ্রামের বিএনপি নেতা আলতাফ গাছ লুটের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। গাছ কাটার সময় চঞ্চল স্বশরিরে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় উৎসুক এক ব্যক্তিকে চঞ্চল গালিগালাজ করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। গাছ কাটা লেবাররা আশেপাশের কোন গ্রামের বাসিন্দা নন। অন্য এলাকা থেকে তাদের আনা হয়েছে। মুঠো ফোনে কথা হয় চঞ্চল ও আলাতাফের সাথে। উভয়েই জানিয়েছেন তারা গাছ কাটার সাথে সম্পৃক্ত নন।

একটি সূত্র জানিয়েছে, দুই নছিমন ভর্তি গাছ রায়পুরের দিকে নেয়া হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা। অপর নছিমন ভর্তি গাছ নারিকেলবাড়িয়া ফাঁড়ি পুলিশ নাগালে পেয়েও আটকাতে পারেননি। ওই নছিমন ভর্তি গাছের আনুমানিক মূল্য প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা।

বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাইজুর রহমান জানিয়েছেন, সংবাদ পেয়ে নারিকেলবাড়িয়া ফাঁড়ি পুলিশ ও থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে গাছ কাটার সাথে সম্পৃক্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে আমি সেখানে নিজে উপস্থিত হয়ে সহকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে আসি, বাকি গাছগুলোর জব্দ তালিকা করতে। পুলিশের আরো একটি টিমকে লুট হওয়া গাছ খুঁেজে বের করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গাছ কাটা লেবার ও নছিমন চালকদের ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরো জানান, সাবেক এমপি রণজিত রায়ের সব সম্পত্তি এখন সরকারের। ফলে সরকারি এই জমির সব কিছুই দেখভালের দায়িত্ব এখন প্রশাসনের।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version