বাংলার ভোর প্রতিবেদক

যশোর পোস্ট অফিসপাড়ার আব্দুল খালেকের ছেলে বিতর্কিত পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগের নামধারী নেতা আলমগীর কবির সুমন ওরফে হাজি সুমন ও তার সহযোগী সুলতানপুর গ্রামের মান্নান ওরফে বিচেলী মান্নানের ছেলে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে আসামিরা ভোলাট্যাংক রোডস্থ ‘সোনালী স্যাটেলাইট’ কেবল প্রতিষ্ঠানে সশস্ত্র হামলা, ভাংচুর ও টাকা লুট শেষে সই-স্বাক্ষর করে নেন। এ সময় তারা পার্টনারশীপ চুক্তিপত্র লিখে বাদী রাজনকে অস্ত্রের মুখে ভয়-ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর ও মাসিক ১০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানায়। কথার নড়চড় হলে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলেও শাসিয়ে আসে। পরবর্তীতে আসামিরা প্রতিমাসে প্রতিষ্ঠান মালিক একে সিদ্দিকী রাজনকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। এর বাইরে ৮শ থেকে ৯শ গ্রাহকের কাছ থেকে মাসিক সংযোগ ভাড়া আসামির লোকজন আদায় করেন। অব্যাহতভাবে জীবনাশের হুমকি দেয়ায় প্রতিষ্ঠান মালিক এতদিন আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পাননি। অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যশোর ডিবির ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলী আদালতে দায়ের করা মামলার আরজিতে এসব অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠান মালিক ও মামলাটির বাদি শহরের রেলরোডস্থ মিজানুর রহমানের ছেলে একে সিদ্দিকী রাজন।

মামলাটির বাদী একে সিদ্দিকী রাজন জানান-তার পিতা মিজানুর রহমান ১৯৯২ সালে ‘সোনালী স্যাটেলাইট’ কেবল অপারেটরের লাইসেন্স গ্রহণ করে বৈধভাবে ব্যবসা করে আসছিলেন। হঠাৎ মিজানুর রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে পুত্র (বাদী) একে সিদ্দিকী রাজন ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন।

২০১৫ সালের ১ জুন আসামি বিতর্কিত পৌর কাউন্সিলর হাজি আলমগীর কবির সুমন ও তার সহযোগী সুলতানপুর গ্রামের মান্নান ওরফে বিচেলী মান্নানের ছেলে জাকির হোসেনসহ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী সোনালী স্যাটেলাইট কেবল অপারেটর প্রতিষ্ঠানে অতর্কিত হামলা করে। আসামিরা ব্যবসায় পার্টনার দাবি করে এবং মাসে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে চাপ সৃষ্টি করে। এতে রাজি না হওয়ায় আসামিদ্বয় তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গদের দিয়ে ক্যাশ বক্সের ড্রয়ার খুলে টাকা লুট ও ভাংচুর করে।

একপর্যায়ে পার্টনারশিপ চুক্তিপত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এনিয়ে কোন রকম টু-শব্দ করলে জীবনে মেরে লাশ গুম করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দিয়ে আসে। সেই থেকে আসামিরা ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছেন।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকুলে এসেছে দাবি করে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন একে সিদ্দিকী রাজন। সোমবার ৯ সেপ্টেম্বর দায়ের করা মামলায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ৫ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

এদিকে, সোমবার মামলা হয়েছে জানতে পেরে আসামিরা সাক্ষীদের ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলাটির বাদী একে সিদ্দিকী রাজন। এ ব্যাপারে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Share.
Leave A Reply

Home
News
Notification
Search
Exit mobile version