বাংলার ভোর প্রতিবেদক
হরেক রকমের সবজিতে বাজার সয়লাব। দামও নাগালের মধ্যে। তার ওপর আলু, পেঁয়াজ, চাল, মাছ, মুরগির দামও কমতির দিকে। শুধুমাত্র সয়াবিন তেলই যা একটু বেশি। স্বস্তির এমন সুবাতাস দীর্ঘায়িত হোক এ প্রত্যাশা করেন যশোরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের বাসিন্দা ফিরোজ সাইফুল আলম। নিত্যপণ্যের বাজার ঠিক থাকলে আর কিছু সমস্যা নয় মন্তব্য করে ফিরোজ আলম আরো বলেন, বহুদিন পরে অল্প টাকায় ব্যাগ ভরে গেল।

শুক্রবার যশোর শহরের হাজী মোহাম্মদ মহসিন রোড বড়বাজারে সরেজমিনে গেলে বাংলার ভোরকে এসব কথা বলেন ক্রেতা ফিরোজ আলম। তার কথার সূত্রে বড়বাজার কালীবাড়ি রোড ও নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে কেজি প্রতি ফুলকপি মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, শিম ২০ থেকে ৪০ টাকা, ব্রোকলি ৫০ টাকা, পালং শাক ৩০ টাকা, মেটে আলু ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিচুরি ৪০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, পেঁয়াজ কালি ২০ টাকা, ধনে পাতা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বিটরুট ৫০ টাকা, মানকচু ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, কাঁচা কলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, আমড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পুঁইশাক ২০ থেকে ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কুমড়ো ২৫ থেকে ৩০ টাকা, সবুজ শাক ৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লাউ পিস প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

সবজি বিক্রেতা সাকিব মোল্লা বলেন, সময়টা এমন যে, যতদূর দৃষ্টি যাবে আপনি দেখবেন মাঠের পর মাঠ সবজি আর সবজি। বিধায় এ মৌসুমে বাজারে সবজির সরবরাহ চাহিদার তুলনায় একটু বেশি। এজন্য দাম কিছুটা কমতির দিকে। তবে সবজির বিক্রি বেশ ভালো বলে জানান সাকিব।

আরও পড়ুন .. ..

হাদির মৃত্যুতে যবিপ্রবিতে গায়েবানা জানাজা, শনিবার ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ

আলু পেঁয়াজের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে কেজি প্রতি নতুন আলু ১৫ থেকে ২০ টাকা, পুরনো আলু ১৭ থেকে ২০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ ৮০ টাকা, পুরনো পেঁয়াজ ১০০ টাকা, আদা ১৬০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
বিক্রেতা নাজমুল ঢালী বলেন, আমদানির প্রভাবে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও ফের বৃদ্ধি পাবার আশংকা রয়েছে। আলুর দাম আরো কমতে পারে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে কেজি প্রতি রুই (দুই কেজি সাইজ) ৩২০ টাকা, কাতলা (তিন কেজি সাইজ) ৩৮০ টাকা, মানভেদে মায়া ৪০০ টাকা, পুঁটি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, পারশে ৫৫০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৯০০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৭০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, নাইলোটিকা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, টাকি ৩৫০ টাকা, ভেটকি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, পাঙাশ ১৭০ টাকা, বাটা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
বাজার করতে আসা শহরের পুরাতন কসবা বিভূতিভূষণ সড়কের বাসিন্দা শামসুজ্জামান খোকন বলেন, আজ বাজারে সবরকম মাছে ভরপুর। দামও বেশ কম মনে হওয়াড একটু বেশি করে কিনলাম।

বিক্রেতা পরেশ বিশ্বাস বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ ভালো। বিক্রি বাট্টাও বেশ।

মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, গরুর ভুঁড়ি ৩৫০ টাকা, গরুর কলিজা ৮৫০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালী ২১০ থেকে ২৫০ টাকা, লেয়ার ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি ৫৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

গরুর মাংস বিক্রেতা সাব্বির বিফ হাউজের মালিক সাব্বির হোসেন জানান, হাটে বাড়তি দামে গরু কিনলেও আমরা ৭৫০ টাকায় ভালো মানের মাংস বিক্রি করছি।

মুদিপণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে কেজি প্রতি সয়াবিন তেল ১৯২ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন ১৯০ টাকা লিটার, সরিষার তেল ২১০ থেকে ২৪০ টাকা, পাম তেল ১৬৪ বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কেজি প্রতি মোটা মসুরির ডাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি মসুরির ডাল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, মুগ ডাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, ছোলার ডাল ১১০ থেকে ১২০ টাকা, বুটের ডাল ৫৫ টাকা, আটা ৪৫ টাকা, ময়দা ৫৫ টাকা, চিনি ৯০ টাকা, লাল চিনি ১২০ টাকা বিক্রি হয়েছে।

বাজারে সবরকম মশলার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে সিঁথি স্টোরের মালিক অসিত সাহা বলেন, হঠাৎ সবরকম মশলায় ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে সুপার মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৬১ থেকে ৬৪ টাকা, রড মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, জিরা মিনিকেট ৭৪ থেকে ৭৬ টাকা, বাসমতী ৭৬ থেকে ৭৮ টাকা, সুবললতা ৫০ থেকে ৫২ টাকা, আটাশ ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা, নূরজাহান ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৭৪ থেকে ৭৬ টাকা বিক্রি হয়েছে।

হাটচান্নী চাল বাজারের নিউ মা কালী ভান্ডারের পরিচালক অভিজিত ভৌমিক বলেন, সবরকম চালের দাম বেশ কম। তবুও বাজার বেশ খারাপ। বিক্রি যা হচ্ছে তাতে দোকান খরচ ওঠানো মুশকিল।

ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে লাল ডিম হালি প্রতি ৩৩ থেকে ৪০ টাকা, সাদা ডিম ৩২ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হয়েছে।

Share.
Exit mobile version