চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা
জীবননগর থেকে অপহরণ হওয়ার ২৩ দিন পর অপহৃত ৫ ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, ডিবি ও পুলিশ সুপারের বিশেষ টিম বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোরে যশোরের ঝিকরগাছা থানার হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রেজাউলের খামারবাড়ির গোডাউন থেকে তাদের উদ্ধার করেন। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন যশোরের ঝিকরগাছা থানার শিমুলিয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেন (৪০), বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী সাগরিকা খাতুন এবং কুল্লা গ্রামের বিকাশ দেবনাথ (৩০)।
জানা গেছে, সোনা চোরাচালানের ঘটনা দেখে ফেলা ও স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগে এই পাঁচজনকে অপহরণ করে স্বর্ণ চোরাচালানকারী সিণ্ডিকেটে সদস্যরা। দীর্ঘ ২৩ দিন আটকে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করাসহ শফিকুল ইসলাম নামের একজনের ৪টি আঙ্গুল কেটে দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত ১১ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণের একটি বড় চালান ভারতে পাচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাচারকারীদের পূর্ব পরিকল্পনায় সীমান্ত এলাকা থেকে চালানটি আত্মসাৎ হয়ে যায়। ওই দিন সীমান্ত এলাকায় মাঠে কাজ করছিলেন গোয়ালপাড়া গ্রামের স্বপন হোসেন (৪০), হাসান মিয়া (২৭) ও হোসেন (৩০)। তারা ঘটনাটি দেখে ফেলায় ১৩ অক্টোবর সকালে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর তাদেরকে অপরহণ করা হয়। এর আগেন দিন সন্ধ্যায় অপহরণ হয় স্বর্ণ পাচারকারী চক্রের সদস্য শফিকুল ইসলাম (৩০) ও তার পিতা আনারুল ইসলামকে (৫২)। স্বর্ণ চোরাচালান সিণ্ডিকেটের মদদে তাদেরকে অপহরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) জানান, ঘটনার বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও ওই ৫ ব্যক্তির কোনো খোঁজ না পেয়ে নিখোঁজ হাসানের পিতা শওকত আলী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৩/৪ জনকে অজ্ঞাতনামা করে জীবননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ২১ অক্টোবর সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। মামলার পরেও ওই অপহৃত পাঁচজন উদ্ধার না হওয়ায় তাদের উদ্ধারের দাবিতে ১ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে জীবননগর মুক্তমঞ্চে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
পরবর্তীতে মানববন্ধনের পর ৪ নভেম্বর দুইজনকে আটক করে জীবননগর থানা পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। ৫ নভেম্বর ভোরে অপহৃত ৫ ব্যক্তিকে যশোরের ঝিকরগাছা থানার হাজিরবাগ ইউনিয়নের কুল্লা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রেজাউলের খামারবাড়ির গোডাউন থেকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
এ সময় খামারবাড়ির মালিক রেজাউল ইসলাম ও আব্দুল গফফার আগেই পালিয়ে যায়। তবে খামারবাড়ি হতে গ্রেফতারপূর্বক তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তারা হলেন ঝিকরগাছা থানার শিমুলিয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেন (৪০), বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী সাগরিকা খাতুন এবং কুল্লা গ্রামের বিকাশ দেবনাথ (৩০)।
