বাংলার ভোর প্রতিবেদক
অবিলম্বে হাসপাতালের নামে দখলকৃত মুক্তেশ্বরী নদীকে অবমুক্ত করা, নদীর সীমানা উদ্ধার এবং দখলদার উচ্ছেদ ও নদী সংস্কারে করণীয় নির্ধারণের জোরালো দাবি জানানো হয়েছে।

এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ও দাবি তুলে ধরতে সোমবার বিকেলে প্রেসক্লাব যশোরের হলরুমে ‘মুক্তেশ্বরী বাঁচাও আন্দোলন যশোর’র আয়োজনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মুক্তেশ্বরী বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক অনিল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এই সভায় বক্তারা বিগত দিনে নদী সংস্কার আন্দোলন হলেও কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বক্তারা অভিযোগ করেন, নদী নানাভাবে দখল হয়ে আছে এবং মুক্তেশ্বরী নদীর বেশ কয়েকটি জায়গায় দৃশ্যমান দখল রয়েছে।

বক্তাদের মূল বক্তব্যে উঠে আসে আদ্ দ্বীন হাসপাতালের বিরুদ্ধে মুক্তেশ্বরী নদী অবৈধভাবে দখল করে রাখার অভিযোগ। বক্তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “মুক্তেশ্বরী নদীতে আদ্ দ্বীন অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। তাদের মিনিমাম লজ্জা শরম নাই। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, তখন তারা সেই দলের লোক হয়ে যায়। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের আমলে শেখ আফিল ছিলেন তাদের রক্ষাদার, এখন শেখ বশির তাদের হাতিয়ার।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন যে, নদী রেকর্ডের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি করে একটি রেকর্ডে নদী, অন্য রেকর্ডে ধানী, ডোবা ইত্যাদি শ্রেণী পরিবর্তন হতে হতে তা ব্যক্তিমালিকানা হয়ে গেছে। নদী দখলকারীরা রেকর্ড সংশোধন করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দখলে আছে।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা, বর্তমান সরকারের প্রতি অবিলম্বে অবৈধ দখলদার আদ্ দ্বীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই প্রতিষ্ঠানটি দলীয় ও ধর্মীয় কায়দায় মানুষকে জিম্মি করে এই সব কাজ করছে।”
বক্তারা আরও বলেন, ভৈরব ও মুক্তেশ্বরী নদী না বাঁচানো গেলে শহরের জলাবদ্ধতা ও আগামীর জন্য বসবাস বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এককভাবে এই নদী দখল করে রাখতে পারে না। এই দখলের পেছনে নিশ্চয়ই সরকারি কোনো বড় কর্মকর্তার হাত রয়েছে বলেও তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন।

মুক্তেশ্বরী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়ার পরও জটিলতা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। বক্তারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা যখন আন্দোলন করছি সাধারণ মানুষের জন্য, সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৃহৎ আকারে প্রতিবাদ গড়ে তুলব। যেকোনো ভাবে হোক, আমরা মুক্তেশ্বরীকে অবৈধ দখলমুক্ত করে ছাড়ব।”

সভায় বক্তব্য রাখেন, মুক্তেশ্বরী বাঁচাও আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, ভৈরব নদ আন্দোলনের উপদেষ্টা তসলিম উর রহমান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হাচিনুর রহমান, অধ্যাপক ইসরারুল হক, প্রকৌশলী আবু হাসান, সাইফুজ্জামান মজু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হারুন অর রশিদ, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাশেদ খান, চৌগাছা এলাকার পক্ষে শাহাজাহান আলী, কপোতাক্ষ নদ বাঁচাও আন্দোলনের নেতা আব্দুর রহিম, ভবদহ আন্দোলন সংগ্রাম কমিটির অন্যতম নেতা অনিল বিশ্বাস, ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট মাহামুদ হাসান বুলু, অধ্যাপক শাহিন ইকবাল, চাঁচড়া এলাকার শামীম মোড়ল, বাগেরহাট এলাকার প্রতিনিধি শাহাবুদ্দিন বাটুল এবং ছাত্রনেতা ইমরান খান।
মতবিনিময় সভাটি পরিচালনা করেন মুক্তেশ্বরী বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version