সাতক্ষীরা সংবাদদাতা

সাতক্ষীরা নগরের ৯৪ শতাংশ দরিদ্র মানুষ ‘নবায়নযোগ্য জালানি’ শব্দের সাথে পরিচিত নয়। এসব পরিবারের মাসিক আয়ের প্রায় ১৬ শতাংশই ব্যয় হচ্ছে বিদ্যুৎ ও রান্নার জালানি ক্রয়ে। পরিবার প্রতি মাসে গড়ে এই খরচ প্রায় ২ হাজার ৩৭২ টাকা। এর মধ্যে গড় বিদ্যুৎ খরচ ১ হাজার ১৪৪ টাকা। আর রান্নার ‘নবায়নযোগ্য জালানি’র সাথে পরিচিত নয় নগরের ৯৪ শতাংশ দরিদ্র মানুষ  বাবদ ব্যয় ১২২৭ টাকা।

আজ (সোমবার) সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) আয়োজিত ‘নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জালানির বর্তমান ব্যবহার এবং নবায়নযোগ্য জালানি গ্রহণে চ্যালেঞ্জ : প্রেক্ষিত সাতক্ষীরা শহর’ শীর্ষক এক সংলাপে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সংলাপে সাতক্ষীরার নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জালানি ব্যবহার বিষয়ক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক কামরুজ্জামান সাগর।

‘বারসিক’ সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা, বিভাগীয় শহর রাজশাহী এবং জেলা শহর সাতক্ষীরার নগর দরিদ্রদের জালানি ব্যবহার এবং নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহারে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চ্যালেঞ্জ বিষয়ক এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।

গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, নগরের দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রাপ্যতা অনুযায়ী নানা ধরনের জালানি উপকরণ ব্যবহার করে। এক্ষেত্রে সাতক্ষীরার নগর দরিদ্রদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ পরিবার রান্নার কাজে লাকড়ির ব্যবহার করে। ৫৮ শতাংশ পরিবার গাছের পাতা, ৪০ শতাংশ পরিবার গ্যাস সিলিন্ডার, ৩২ শতাংশ পরিবার প্লাস্টিক/পলিথিন ব্যবহার করছে।

বিগত দুই বছরে নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৫ শতাংশ পরিবারে দুর্ঘটনা ঘটেছে। রান্নার লাকড়ি থেকেই দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে। রান্নার ধোঁয়ার কারণে গত ছয় মাসের মধ্যে ২৬ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের গুরুতর কাশির সমস্যা হয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় গবেষণার তথ্য সংগ্রহকালে ৯৪ শতাংশ উত্তরদাতা ‘নবায়নযোগ্য জালানি’ শব্দটির সাথে পরিচিত নন বলে জানিয়েছেন। মাত্র ৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন তারা এই শব্দটি শুনেছেন এবং এ সম্পর্কে ধারণা রাখেন। এছাড়া সাতক্ষীরা শহরের নগর দরিদ্র পরিবারের প্রায় ৩ শতাংশ পরিবার সোলার প্যানেল ব্যবহার করেন বলে জানিয়েছেন।

সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাড. আজাদ হোসেন বেলালের সভাপতিত্বে ও মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্তের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বারসিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। আলোচনায় অংশ নেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন-উর-রশিদ, পরিবেশ কর্মী অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, সাতক্ষীরা পৌর কাউন্সিলর মারুফ হোসেন ও অনিমা রানী, নাগরিক নেতা আলী নুর খান বাবুল, বাংলাদেশ জাসদের নেতা ইদ্রিস আলী, সুজন সভাপতি অধ্যাপক পবিত্র মোহন দাস, সনাক-সাতক্ষীরার সহসভাপতি আব্দুস সামাদ, সাংস্কৃতিক কর্মী শেখ সিদ্দিকুর রহমান, বদ্দীপুর কলোনীর বাসিন্দা সালমা খাতুন, যুব সংগঠক মুশফিকুর রহিম প্রমুখ।

Share.
Exit mobile version