বাংলার ভোর প্রতিবেদক 
আগামী নির্বাচনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি। এসময় তিনি হিন্দু নারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনারা সবাই নির্ভয়ে শাঁখা সিন্দুর পরে উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিতে যাবেন।


শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শনিবার দুপুরে যশোর টাউন হল ময়দনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।


নিজ নিজ ধর্ম চর্চার গুরুত্ব আরোপ করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে অভূতপূর্ব ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে। ঐক্য ধরে রাখতে পারলে আমরা সবাই একত্রে সুখে শান্তিতে বাস করতে পারবো।  নিজ নিজ ধর্ম চর্চায় কারো বাঁধা নেই। কোন বিধি নিষেধও নেই। কেউ যদি বাঁধা দেয়, খবর দিবেন আমরা আছি। প্রশাসন আপনাদের সাথেই আছে। আমরা সবখানেই যে তাৎক্ষণিক পৌঁছাতে পারবো তা নয়। কিন্তু আমরা আপনাদের পাশে আছি। এ ধরণের প্রত্যেকটি দুর্বৃত্তায়নের বিচার হবে।

তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, ফ্যাসাদ বা বিশৃংখলা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়ে জঘন্যতম কাজ। কিছু লোক আছে উস্কানি দিয়ে ফ্যাসাদ বাঁধাতে চায়। উস্কানি থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সকলেই যেন দেশে শান্তিতে বসবাস করতে পারি। সেজন্য সকলের সহযোগিতা দরকার।
 
যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সবাই ধর্মীয় সংখ্যালঘু পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাদের যাতে কেউ ক্ষতি করতে না পারে, আমরা পাহারা দিয়েছি। তবে কিছু বিচ্ছন্ন ঘটনা ঘটেছে। সেটা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু সেই ঘটনাগুলো ধর্মীয় কারণে নয়। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতায় বিগত ১৭ বছরের ফ্যাসিস্টের আচরণের কারণে অনেকে প্রতিক্রিয়ার শিকার হয়েছেন। অতীতে আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা হয়েছে। যশোরের সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সম্প্রীতি নষ্ট করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, দেশের সবার সমান অধিকার রয়েছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। রাজনীতিকে মন্দির, মসজিদ বাইরে রাখি, তাহলে অনেক সংকট কেটে যাবে। অচল ক্রীড়াঙ্গন, সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সচল করতে হবে। তাহলেই সমাজে শান্তি ফিরবে।’

অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক ছিলেন যশোর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রকাশানন্দ। বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, প্রেস ক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য খালেদ সাইফুল্লাহ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাশেদ খান প্রমুখ।

আলোচনা শেষে শত মোমবাতি প্রজ্বলন করে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব ও মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বেজপাড়া বালুর মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version