খাজুরা সংবাদদাতা

যশোরের বাঘারপাড়ার বন্দবিলা ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেনের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। অসহায় এক পরিবারের জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন জাহিদ। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার জেলা ও উপজেলা কৃষক দলের নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে বন্দবিলা ইউনিয়নের সেকেন্দারপুর গ্রামের ছমির উদ্দীন তরফদার ৬৪ শতক জমি বিক্রি করেন পাশের রায়পুর ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের আকবর আলী বিশ্বাস ও তার ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের কাছে। জমি দলিল করে দেয়ার আগেই মৃত্যু হয় ছমির উদ্দীন তরফদারের।

২০০১ সালে ছমির উদ্দীনের ওয়ারেশ বাকী বিল্লাহ, আব্দুস সাত্তার, মাসুম বিল্লাহ, হাজেরা খাতুন, মাহমুদা খাতুন ও স্ত্রী আয়শা বেগম ওই দুই ব্যক্তিকে জমি লিখে দেন। জমি লিখে দেওয়ার সময় ছেলে মাসুম বিল্লাহ, দুই মেয়ে হাজেরা ও মাহমুদা অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। তাদের পক্ষে দলিলে স্বাক্ষর করেন মা আয়শা বেগম।

এদিকে দীর্ঘদিন পর ওই জমির মালিকানা দাবি করছেন জাহিদের স্ত্রী হাজেরা বেগম। স্ত্রীকে হাতিয়ার করে জাহিদুল সম্প্রতি জমির দখল নিয়েছেন। নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী পরিবার আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালত জমিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

বাঘারপাড়া থানা পুলিশ সরেজমিনে যেয়ে জাহিদকে ওই জমিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করলেও ক্ষ্যান্ত হননি তিনি।

নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভূমি আইনে রয়েছে ‘মা’ যদি তার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের সম্পত্তি বিক্রি করেন তাহলে আদালতের অনুমতি লাগে। আদালতের অনুমতি নিয়ে বিক্রি করলে পরবর্তীতে কোন কালেই আর সন্তানরা ওই জমির মালিকানা দাবি করতে পারেন না। আর যদি আদালতের অনুমতি না নিয়ে বিক্রি করেন তা হলে ওই সম্পত্তি সন্তানরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর দাবি করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে মেয়েরা আঠারোর পরে ও ছেলেরা একুশ বছর বয়সের পরে। তবে আইনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, এ দাবি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার তিন বছরের মধ্যে করতে হবে। তিন বছর পার হলে এ দাবি আর আইনের চোখে গ্রহণযোগ্য থাকবে না।

এ বিষয়ে জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জমি দখলের বিষয়ে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শ্বশুরকূলের সম্পত্তি নিয়ে তার কোন মাথা ব্যথা নেই। তার শ্যালক ও শ্যালিকা ওই জমি বর্গা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এর বাইরে তিনি আর কিছুই জানেন না।

ছমির উদ্দীন তরফদারের বড় ছেলে বাকি বিল্লাহ জানিয়েছেন, জাহিদুলের কারণে তিনি ভিটেছাড়া। তার বাপের ভিটায় যেখানে তার ঘর করা রয়েছে সেই জমিও তার স্ত্রী হাজেরাকে ফুসলিয়ে অন্যত্র বিক্রি করেছে। বাবা জীবিত থাকতে যে জমি বিক্রি করে গেছেন, এখন সেই জমির মালিকানা দাবি করা আর বাবাকে অস্বীকার করা একই কথা।

এ বিষয়ে আকবর আলী বিশ্বাসের ছেলে আবু তালহা বাঘারপাড়া উপজেলা ও যশোর জেলা কৃষক দলের নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বাঘারপাড়া উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মশিউল আজম জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। জাহিদুল ইসলামকে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version