ক্রীড়া ডেস্ক

টাইব্রেকারে ভারতের ১৯ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড়ের নেওয়া সোজাসুজি পঞ্চম শটটি নিচু হয়ে গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ রুখে দিতেই ধারাভাষ্যকার চিৎকার করে উঠলেন, ‘বাংলার বাঘেরা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিল।’

ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সের গ্যালারিতেও তখন উচ্ছ্বাসের বান। বাংলাদেশের যুবারা রোমাঞ্চকর টাইব্রেকার জিতে ফাইনাল নিশ্চিত করার মেতে উঠলেন উদ্যাপনে। দেশের পতাকা মেলে দিয়ে স্টেডিয়ামে চক্কর দিতে লাগলেন। ডাগআউটে গিয়ে কোচ, কর্মকর্তা ও দর্শকদের সঙ্গেও ভাগাভাগি করতে লাগলেন জয়ের আনন্দ।

বৃথা গেল না শিষ্যদের প্রতি মারুফুল হকের বিশ্বাস। বৃথা গেল না অধিনায়ক মেহেদী হাসান শ্রাবণের কথা। ভারতের বিপক্ষে জয় পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন দুজনে। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে তাঁরই প্রতিফলন দেখাল বাংলাদেশ। টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে নিশ্চিত করলে ফাইনাল।

পেনাল্টি শুটআউটে প্রথম ও পঞ্চম রাউন্ড মিস করা ভারতের যুবারা গোল করেছেন ৩টি। দারুণভাবে ঝাঁপিয়ে দুটি কিক রুখে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক আসিফ। ৬৭ মিনিটে ভারতের একটি আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে শ্রাবণ আহত হয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়লে পরের মিনিটে বদল হিসেবে মাঠে নামেন তিনি। সেই আসিফই হয়ে উঠলেন বাংলাদেশের জয়ের নায়ক।

বাংলাদেশ টাইব্রেকারে চারটি শটের চারটিতেই গোল করেছে। এর আগে মারুফুলের শিষ্যরা প্রথমার্ধেই লিড নিয়েছিল। ৩৫ মিনিটে বাম প্রান্ত ধরে এক আক্রমণে রাব্বি হোসেন রাহুলের ক্রস থেকে প্রথম টাচে বল ভারতের জালে পাঠান আসাদুল মোল্লা। বাংলাদেশ অবশ্য সেই ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি বিরতির পর। ৭৫ মিনিটে বক্সে জটলার ভেতর থেকে বুলেট গতির শটে ভারতকে সমতায় ফেরান পরমবীর।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর ৫ মিনিট অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত খেলা চললেও ব্যবধান ১-১ থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই ‘বাজপাখি’ হয়ে ওঠেন আসিফ। ২৮ আগস্ট দশরথ রঙ্গশালায় শিরোপা লড়াইয়ে স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নেপালের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়ে ভারতের সামনে পড়েছিল মারুফুল শিষ্যরা। সেই বাধা ডিঙিয়েছেন শ্রাবণরা। নেপালের বিপক্ষে এবার প্রতিশোধ নিয়ে শিরোপা জিততে পারবেন তো যুবারা?

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version