বাংলার ভোর প্রতিবেদক

যশোরে পাঁচটি নদীর ওপর আটটি সেতু নির্মাণে অভ্যন্তরীণ জলপথ ও তীরভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুসারে যথাযথ উল্লম্ব-অনুভূমিক জায়গা না রাখার বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। এ জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী বা তার প্রতিনিধি এবং যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে আগামী ১১ জুন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত বলেছেন, এই সময়ে সব ধরনের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে। পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত ঠিকাদারদের অর্থছাড় বন্ধ থাকবে।

আটটি সেতু হচ্ছে, যশোর সদর উপজেলার ভৈরব নদীতে ছাতিয়ান তলা সেতু, রাজারহাট সেতু ও দাইতলা সেতু; অভয়নগর উপজেলার টেকা নদীতে টেকা সেতু; মনিরামপুর উপজেলার মুক্তেশ্বরী নদীতে হাজরাইল সেতু ও শ্রী নদীতে নেহালপুর সেতু এবং শার্শা উপজেলার বেতনা নদীতে কাজীরবের থেকে ইসলামপুর মোড় আরসিসি গার্ডার সেতু ও শেয়ালঘানা গাতিপাড়া আরসিসি গার্ডার সেতু। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ গত বছর রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে অভ্যন্তরীণ জলপথ ও তীরভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুসারে সেতু নির্মাণে যথাযথ উল্লম্ব-অনুভূমিক জায়গা রাখতে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতির বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে হলফনামা আকারে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী, যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ চার বিবাদীর প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়।

‘ভৈরব নদে চলছে ব্রিজ নির্মাণের কাজ: হাইকোর্টের নির্দেশনা অমান্য’ শিরোনামে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ২৭ নভেম্বর দেওয়া আদেশ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আবেদন দেয় রিট আবেদনকারী। অন্যদিকে প্রধান প্রকৌশলীর পক্ষ থেকে হলফনামা আকারে বক্তব্য দাখিল করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেন। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম শামসুল হক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম। প্রধান প্রকৌশলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম জহিরুল ইসলাম। পরে আইনজীবী এম শামসুল হক বলেন, অভ্যন্তরীণ জলপথ ও তীরভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুসারে সেতু নির্মাণে যথাযথ উল্লম্ব-অনুভূমিক জায়গা রাখতে হবে। যাতে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ঠিক থাকে ও নৌপরিবহন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটে। যশোর সদর উপজেলার ভৈরবসহ পাঁচটি নদীর ওপর পৃথক আটটি সেতু নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে বিধিমালা অনুসারে যথাযথ উল্লম্ব-অনুভূমিক জায়গা না রাখা এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) অনুমতি না নেওয়ায় রিটটি করা হয়।

হাইকোর্ট বিধিমালা অনুসারে জায়গা রেখে নির্মাণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আবেদনটি করা হলে শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেন।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version