বাংলার ভোর প্রতিবেদক
খুলনার রূপসা সেতুর পূর্ব পাশে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগর শেখ। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদকসহ ১৯টি মামলা ছিল বলে জানা গেছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রূপসা এলাকার জাপুসা চৌরাস্তার পূর্ব পাশে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সাগর শেখ যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ফয়েজ শেখের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে খুলনায় আত্মগোপনে ছিলেন এবং রূপসা এলাকায় জমি কিনে নতুন বাড়ি নির্মাণ করছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে গোলাগুলির শব্দ শুনে জাপুসা এলাকার এক বাসিন্দা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানান। ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে রূপসা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক মীর জানান, পুলিশ গিয়ে দেখে নিহত সাগর শেখের মাথায় একটি এবং হাঁটুতে আরেকটি গুলি লেগেছে। তিনি আরও জানান, নিহত ব্যক্তি ওই এলাকায় জমি কিনে নতুন বাড়ি নির্মাণ করছিলেন।
আরও পড়ুন .. .. যশোরে অটোরিকশা চালক শহীদ হত্যার প্রধান আসামি আলিফ আটক
তবে কারা এবং কী কারণে তাকে হত্যা করেছে, সে বিষয়ে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।
পুলিশ ও র্যাব সূত্রে জানা গেছে, নিহত সাগর শেখ একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, বিস্ফোরক, অস্ত্র, হত্যাচেষ্টা, চুরি ও মাদকসহ মোট ১৯টি মামলা রয়েছে।
সাগর শেখের ভাই রমজান শেখও ছিলেন কুখ্যাত সন্ত্রাসী, যার বিরুদ্ধে ৩২টি মামলা ছিল। রমজান শেখ যুবলীগ নেতা ম্যানসেলের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২৪ সালের ৮ মার্চ নিজ এলাকায় কুপিয়ে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি সাবেক সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী ছিলেন এবং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলেও জানা যায়।
চলতি বছরের ১৬ মে বেলা ৩টার দিকে র্যাব অভিযান চালিয়ে খুলনার রূপসা এলাকা থেকেই সাগর শেখকে আটক করেছিল। পরে তাকে যশোর আদালতে সোপর্দ করা হয়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আবারও রূপসা এলাকায় ঘাঁটি গাড়েন।
সাগর শেখের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজলিয়া গ্রামে বলে র্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে।
