, তদন্ত কমিটির
সময় পাঁচ দিন বৃদ্ধির আবেদন
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
তিন দিন পার হলেও, খোঁজ মিলেনি যশোরে আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি জুয়েল খানের। ইজিবাইক চালক হত্যার অন্যতম এই আসামি কোথায় আছে, দেশে নাকি দেশ ছেড়ে পালিয়েছে কোনও হদিস জানে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও ইউনিট। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, জুয়েলকে গ্রেফতারে নানা কৌশলে অভিযান চালাচ্ছেন তারা। স্ত্রী, পিতামাতাসহ নিকট আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের নজরদারি রাখার পাশাপাশি সীমান্ত ব্যবহার করে যাতে পালিয়ে না যেতে পারে; সে বিষয়েও পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এদিকে, আসামি পলায়নে জেলা পুলিশের করা তদন্ত কমিটি আরও পাঁচ কর্মদিবস বাড়ানোর আবেদন করেছেন। পলাতক জুয়েল মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি ২০২১ সাল থেকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন।
২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর যশোরের বাঘারপাড়ায় আল-আমিন নামের এক ইজিবাইকচালককে খুন করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার্জশীটভুক্ত কারাগারে থাকা আসামি জুয়েল খান ও হারুন অর রশিদ। গত রোববার সকালে মামলার ধার্য্য দিনে আসামি জুয়েল ও হারুন অর রশিদকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসে তাদের হাজির করা হয়। সেখানে শুনানি শেষে আদালত তাঁদের আবার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আসামির নিরাপত্তা ও কারাগারে পাঠাতে আদালতের উপ পরিদর্শক আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে চার কনস্টেবল দায়িত্ব ছিলেন। এর মধ্যে দুইজন নারী ও দুইজন পুরুষ। হাতকড়ার দড়ি তখন নারী পুলিশ কনস্টেবল সোনালীর হাতে। আদালতের দ্বিতলায় বিচারকের এজলাস থেকে নিচের গারদখানায়ে নেয়া হচ্ছিল। সেসময় জুয়েল ও হারুনের একই সাথে হাতকড়া পরানো ছিলো। আদালত ভবনের নিচতলার সিঁড়ির কাছে পৌঁছালেই জুয়েল কৌশলে হাতকড়ার ভিতর থেকে কবজি বের করে পালিয়ে যান। এরপর বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার রওনক জাহান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালতে ছুটে যান। তারা দ্রুত আসামিকে গ্রেফতারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনদিন পার হলেও পুলিশ কুলকিনারা পায়নি জুয়েলের। এই ঘটনায় আদালতে দায়িত্বরত পুলিশের উপ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে জুয়েলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বে অবহেলা আছে কি না, সেই বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাসারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে পুলিশ প্রশাসন। যার শেষ হয়েছে বুধবার। তবে প্রতিবেদন জমা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাসার। তিনি বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন তিন কর্ম দিবসে দেয়ার কথা থাকলেও সেটা দেয়া হয়নি। আমরা আরো পাঁচ কর্মদিবস বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা পলাতক জুয়েলের মা-বাবা, স্ত্রী, নিকটাত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাকে গ্রেফতারে নানা কৌশলে কাজ করছে পুলিশ। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো আগে জুয়েলকে গ্রেফতার। তদন্তে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অবহেলার প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পলাতক জুয়েল হত্যা মামলার আসামি। আগামী সপ্তাহে রায় হওয়ার সম্ভবনা ছিল। শেষ শুনানি জানতে পেরে সে পালিয়েছে। জুয়েল শারীরিকভাবে রুগ্ন। তার হাতের কবজির চেয়ে হাতকড়ার ব্যাসার্ধ বড়। যার ফলে সে হাতকড়া পরহিত অবস্থায় কৌশলে হাতকড়া থেকে হাতের কবজিটি বের করতে পেরেছে। তবে হত্যা মামলার আসামিকে হাতকড়ার দঁড়ি কেন একজন নারী কনস্টেবলের হাতে কেন দেয়া হলো সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Share.
Exit mobile version