বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা তিনটি মামলায় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলামসহ যশোর জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ৫১ নেতা–কর্মীকে কারাগারে রয়েছে। এবার তাদের ঈদ কাটবে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে। এজন্য পরিবারের সদস্য ও দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও ঈদের আনন্দ ম্লান হয়েছে বলে জানিয়েছেন। গত ৩১ মার্চ নেতাকর্মীরা যশোর জেলা দায়রা ও জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালতের বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে থাকা ৫১ নেতা–কর্মীর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী, সদর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পী প্রমুখ। ঈদের সময় নেতাকর্মীরা কারাগারে থাকায় স্বজনদের মধ্যে যেমন ঈদ আনন্দ ম্লান হয়েছে। তেমন নেতাকর্মীরাও তাদের নেতাদের শূণ্যতা অনুভব করছেন। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পীর মা কল্পনা জামান বলেন, আমার ছেলেসহ ৫১জন জেলে রয়েছে। এবার তাদের ঈদ কাটবে জেলখানায়। গত বছরও আমার ছেলে জেলে ঈদ করেছে। রাজনীতি করার কারণে আমাদের ছেলেরা জেলে। ওরা তো কোন অপরাধ করেনি। শুধু রাজনীতির জন্যই মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠিয়েছে। সন্তানকে ছাড়া ঈদের আনন্দ থাকে না।’
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগরের বাবা ইসলাম বলেন, রাজনীতি করলে জেলখানা দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে যায়। কিন্তু আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জেলে যেতে হয়েছে। ঈদের আগে জামিন হলো না। ছেলেকে ছাড়াই আমরা এবার ঈদ করবো।’
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা বলেন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ৫১ নেতাকর্মী জেলে রয়েছে। তাঁর নিদের্শে কারাবন্দি নেতাকর্মীদের পরিবারের খোঁজ নিচ্ছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। নেতাকর্মীরা যখনই বিপদে থাকে, দল তাদের পাশে দাঁড়ায়। আমরা আশা করেছিলাম ঈদের আগে নেতাকর্মীদের জামিন হবে, কিন্তু সেটি হলো না।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, উচ্চ আদালতের জামিন ও ঈদ সামনে থাকায় আমরা আশা করেছিলাম সবাই জামিন পাবে। কিন্তু সেটি হয়নি। কারাবন্দি ৫১ নেতাকর্মীর পরিবারে বিষন্নতা বিরাজ করছে। তাদের পরিবারের বাড়িতে যাচ্ছি। দেখা করে খোঁজ নিচ্ছি। তবে তারা কেউ ভেঙে পড়েনি, শক্ত আছে।’
জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরের পর যশোর কোতোয়ালি থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চারটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলার মধ্যে একটিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও তিনটিতে ঢাকার উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের জামিন পান নেতা–কর্মীরা। উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেওয়ার নির্দেশ ছিল। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার তিনটি মামলায় মোট ৬৩ নেতা–কর্মী আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। এর মধ্যে বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনায় ১২ জ্যেষ্ঠ নেতার জামিন মঞ্জুর করা হয়। অন্যদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version