বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেলা কৃষি শ্রমিক ইউনিয়ন ও মানবসেবা ট্রেডার্স লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য স্যানিটেশন ও আবাসন প্রকল্পের নামে ৪ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

নামমাত্র জামানতের বিনিময়ে দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর, বাথরুম, পানির ট্যাংকি ও সাবমারসিবল পাম্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় পাঁচ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে এ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীরা সোমবার দুপুর ২টায় যশোর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী ফাতেমা খাতুন। তিনি জানান, মণিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের মুরাদ হোসেন ও স্বরূপদাহ গ্রামের শফিকুজ্জামান ২০২৪ সালের নভেম্বরে মাসে মণিরামপুর, অভয়নগরসহ ৮ উপজেলায় যশোর জেলা কৃষি শ্রমিক ইউনিয়ন ও মানবসেবা ট্রেডার্স লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। এরপর তাদের ২৫ জনকে মাঠ কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন।

বিদেশী সহয়াতায় নামমাত্র মূল্যে বাড়ি, বাথরুম, সাবমারসিবল ও সোলার লাইট স্থাপনের জন্য সদস্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেন। তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে পাঁচ হাজার গ্রাহক সংগ্রহ করেন। যাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় প্রায় ৪ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানে জমা দেয়া হয়।

আরও পড়ুন .. ..

যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগর শেখকে খুলনায় গুলি করে হত্যা

এক বছর অতিবাহিত হলেও কোন গ্রাহককে ঘর, বাথরুম, সাবমারসিবল ও সোলার লাইট কিছুই স্থাপন করে দেয়া হয়নি। গত দুই মাস আগে মুরাদ ও শফিকুজ্জামান আত্মগোপনে চলে যান। এখন গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পেতে তাদের উপরে চাপ সৃষ্টি করছে।

তিনি আরও জানান, মুরাদ ও শফিকুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা উল্টো প্রতারণার মামলা ও ক্ষয়ক্ষতির হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় মাঠকর্মী হিসেবে থাকা তারা ২৫ জন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ওই দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে থানায়, সেনাবাহিনী ক্যাম্পসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মেলেনি।

এমতাবস্থায় সংবাদ সম্মেলনে ওই দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতারণা শিকার মাঠকর্মী সালমা খাতুন, বেবি খাতুন, তিথি ইয়িসমিন, লিশা বেগম, মিনা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে যশোর জেলা কৃষি শ্রমিক ইউনিয়ন ও মানবসেবা ট্রেডার্স লিমিটেড মণিরামপুর শাখা টায়ারপট্টি এলাকায় গেলে অফিস বন্ধ পাওয়া যায়। অফিসে সংস্থাটির কোন পোস্টার বা বিলবোর্ডও পাওয়া যায়নি।

পরে শফিকুজ্জামানের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি ধরেন তার স্ত্রী। তখন তিনি বলেন, তার স্বামী ঢাকাতে। শফিকুজ্জামানের আরেক নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

আরেক অভিযুক্ত মুরাদের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবুল বাশার বলেন, ‘এ ধরনের কোন অভিযোগের বিষয়ে জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে অবশ্যই পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।’

Share.
Exit mobile version