বাংলার ভোর ডেস্ক
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত ও সর্বাধুনিক চিকিৎসার জন্য যে কোনো মুহূর্তে লন্ডনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
ডা. জাহিদ বলেন,
“বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আজ অত্যন্ত নাজুক। চিকিৎসক টিমের ব্যাপক পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে—আজ মধ্যরাতের পর অথবা আগামীকাল সকালেই তাঁকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে লন্ডনে নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সেখানে একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং চিকিৎসক দল প্রস্তুত রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, যাত্রার পূর্বে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, মেডিকেল রিপোর্ট, এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণসংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্য এবং দলের সিনিয়র নেতারাও হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করছেন এবং যেকোনো সময় যাত্রার ঘোষণা দেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই বেগম খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, ফুসফুসের সমস্যা, চোখের গুরুতর অসুস্থতাসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন। এসব জটিলতার কারণে তাঁকে প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া দীর্ঘ কারাবাস ও গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান। এরপর চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গমন করেন তিনি। সেখানে ১১৭ দিন অবস্থান করে চিকিৎসা গ্রহণের পর ৬ মে দেশে ফিরে আসেন।
বিএনপি এবং পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় দেশে চিকিৎসা যথেষ্ট নয় বলে মত দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড। এ কারণেই লন্ডনে পুনরায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং দলের নেতাকর্মীদের ভিড়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
সব মিলিয়ে, বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—যেকোনো মুহূর্তেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে বিদেশে নেওয়া হতে পারে।
