কাজী নূর
আজ বাজার করে স্বস্তি পেলাম। কাঁচা সবজিসহ মাছের দাম কিছুটা কম মনে হলো। আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের প্রত্যাশা বেতন যা পাই তাই দিয়েই যেন পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারি। সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে গেলে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। না কাউকে দেখাতে পারি, না কাউকে বলতে পারি। নিরবে সয়ে যাই। পুরুষ মানুষ তো এমন অনেক ঝড় সয়ে ঘরে ফিরে হাসি মুখে থাকি। ভেতরে অপ্রকাশিত যন্ত্রণা আর মুখে খুশির ঝরণা ধারা। এটাই হচ্ছে পুরুষ মানুষের চিরন্তন চরিত্র-শুক্রবার যশোরের হাজী মোহাম্মদ মহসিন রোড বড় বাজারে ‘বাংলার ভোর’কে এমনটাই বলছিলেন, কবি, লেখক জাহিদ ইকবাল।
জাহিদ ইকবালের কথার সূত্র ধরে বড় বাজার কালীবাড়ি রোড ও নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। কিছু সবজি সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে আগাম শীতকালীন সবজির দাম সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা।
বাজারে এদিন কাঁচকলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কুশি ৪০ টাকা, কচুরমুখি ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, জলপাই ৪০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকা, কুমড়ো ৪০ টাকা, মানকচু ৫০ টাকা, বরবটি ৬০, বেগুন ৮০ টাকা, ওল ৭০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, মেটে আলু ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ৪০ টাকা, চাল কুমড়ো ৪০ টাকা পিস, কচুরলতি ৩০ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, ডাটা ২০ টাকা, সবুজ শাক ৩০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে আগাম শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে ফুলকপি ১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৮০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, বিটরুট ১৪০ টাকা, মিচুড়ি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পালং শাক ৩০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, সবজির সরবরাহ যত বৃদ্ধি পাবে দাম ততটাই কমে আসবে। আল্লাহর রহমতে সব ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহে এসে দেখবেন তরকারির দাম আরো কমেছে।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা, সোনালী ২৬০ টাকা, লেয়ার ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতা নুরুন্নবী জনি বলেন, আপাতত দাম বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা নেই।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে, পাবদা ৩০০ টাকা, কই ২০০ টাকা, নাইলোটিকা ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, আড়াই কেজি সাইজের রুই ৪৩০ টাকা, আড়াই কেজি সাইজের কাতলা ৩৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ টাকা, বাটা ১৮০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৯০০ টাকা, ৫ কেজি সাইজের সিলভার কার্প ৩২০ টাকা, বেলে ৮০০ টাকা, বাইন ৭০০ টাকা, শিং ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা মেহের আলী বলেন, আজ মাছের দাম কিছুটা কম। তাই বিক্রি ভালো।
চালের বাজার চাউল চান্নী ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে মিনিকেট সর্বোচ্চ ৬৬ টাকা, পাইজাম ৫৬ টাকা, সুবললতা ৬০ টাকা, বাসমতী ৮৪ টাকা, স্বর্না ৫২ টাকা, আটাশ ৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ টাকা, কাজললতা ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ী ইসহাক ট্রেডার্সের মালিক জানান, চাল আমদানি না হলে বাজার অস্থিতিশীল হতে পারতো। তবে বর্তমানে চালের দাম কম থাকলেও বিক্রি আশানুরূপ নয়।
মুদি পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা ভোজ্যতেল প্রতি কেজিতে ৫ টাকা কমে ১৯৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা, পাম ১৭৮ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মসুরি ১৪০ টাকা, মোটা মসুরি ১০০ টাকা, সোনা মুগ ১৬০ টাকা, মোটা মুগ ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১১০ টাকা, আটা ৪৫ টাকা, ময়দা ৬০ টাকা, সাদা চিনি ১০৫ টাকা, লাল চিনি ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে লাল ডিম ৪২ টাকা, ছোট লাল ডিম ৩৮ টাকা, সাদা ডিম ৪০ টাকা, বাদামি ডিম ৪৮ টাকা, হাঁস ৭২ টাকা, দেশি মুরগি ৮০ টাকা ও কোয়েল ১২ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রেতা কুদ্দুস আলী বলেন, ফিডের দাম বৃদ্ধি পাবার কারনে ডিমের দামও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
