রাজগঞ্জ প্রতিনিধি

মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ, নেংগুড়াহাটের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে দেখা দিয়েছে গরুর ভয়াবহ লাম্বি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে গরু। অবশ্য অনেক কৃষক ও সাধারণ মানুষ এটিকে বসন্ত বলেও ধারণা করছেন।

ক্ষুরা রোগের চেয়েও লাম্বি স্কিন ডিজিজ ভয়ঙ্কর রোগ, গবাদি পশুর উপর নতুন একটি রোগ। ভাইরাসজনিত এ রোগটি ২০১৯ সালের দিকে ছড়িয়ে পড়ে নেংগুড়াহাট অঞ্চলে। বর্তমানে যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

চালুয়াহাটি ইউনিয়নের পশু চিকিৎসকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পক্স ভাইরাস রোগের ভ্যাকসিন দিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। রোগটি মশা বা মাছির মাধ্যমে আক্রান্ত পশু থেকে সুস্থ পশুর মাঝে ছড়াচ্ছে। এর সঠিক ভ্যাকসিন না থাকায় গরুর মালিকেরা পড়েছেন বিপাকে। চালুয়াহাটি ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ ও কৃষক আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। অনেক গরুর মালিক বলছেন সঠিক চিকিৎসা না পেলে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়তেপারে সাধারণ মানুষ।

চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আটঘরা গ্রাামেরগরুর মালিক গোলাম রসুল বলেন, আমার একটি গরুর সমস্ত শরীরে গুটির মতো ওঠে, কিছুদিন পরে গুটিগুলো থেকে গর্ত হতে শুরু করে। একপর্যায়ে সমস্ত শরীরের পশুর চামড়া খামচা খামচ পড়ে যাচ্ছে। দেখতে খুব ভয়ঙ্কর লাগে এবং গন্ধে কেউ কাছে যেতে পারছে না, গরুটির কষ্ট হলেও সঠিক চিকিৎসা দিতে পারছি না। পশু আক্রান্ত হওয়া চালুয়াহাটি গ্রামের আব্দুস সামাদ সর্দার বলেন, প্রানী চিকিৎসালয় আব্দুল আলীমের কাছে গেলে তিনি বলেন, আপনার গরুর মত শত শত গরু নিয়ে চিন্তায় আছেন কৃষকরা।

চালুয়াহাটি ইউনিয়নের গ্রাম্য পশু চিকিৎসা শাহাদাত হোসেন বলেন, লাম্বি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এটি গরুর এক ধরনের চর্মরোগ। বিভিন্ন কীটপতঙ্গের মাধ্যমে রোগটি ছড়ায়। আবার আক্রান্ত গাভির দুধ বাছুর খেলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গ্রাম্য পশু চিকিৎসকরা বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগের লক্ষণ হলো জ্বর ও গায় ব্যথা। পরে চামড়ার ওপরে গুটি গুটি তৈরি হয়। মানুষের জলবসন্ত হলে যেমন হয়,এটা অনেকটা তেমনই। কিছু কিছু গরুর গলায় ঘা হয়, এবং গরুর চামড়ার নিচে পচন ধরে। রোগটি এমনই মারাত্মক সঠিক চিকিৎসা না পেলে আক্রান্ত গরু দুর্বল হয়ে পড়ে,অনেক গরুর চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরে। গর্ভবতী গাভির ক্ষেত্রে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে গরুর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারিভাবে এ রোগের কোন প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি। এই রোগের কোন চিকিৎসা নাই। তবে আতঙ্কের কারণ নেই, মানুষের যেমন পক্স হয় কিছুদিন পর সুস্থ হয়, তেমনি গরুর এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ।

Share.
Exit mobile version