বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে অপহরণের এক মাস পর ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলামের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেল ৪টার দিকে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামের একটি বাগানে পুঁতে রাখা লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। অপহরণের এক মাস চার দিন পর ঘাতক সবুজের শ্বশুর বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করলো পুলিশ। এ সময় সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লাকে আটক করা হয়েছে। সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশের একটি টিম লাশ নিয়ে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রেজাউল অপহরণ মামলায় পুলিশ এজাহারনামীয় আসামি সবুজকে শনিবার চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। এরপর তার সহযোগী রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে রোববার সাতক্ষীরায় আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রেজাউল ইসলামের পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের সূত্রটি আরো জানিয়েছে, সবুজ ও রিপন যশোর শহরেই রেজাউলকে হত্যা করে। পরে তার লাশ বস্তাবন্দি করে ইজিবাইকে কিছু দূর নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে ও পরবর্তীতে বাসে করে সাতক্ষীরায় নিয়ে যায়। এরপর সবুজ লাশটি তার শ্বশুরবাড়ির পাশে একটি বাগানে পুঁতে রাখে। কয়েকদিন পর বিষয়টি জানতে পারেন সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লা। তিনি লাশটি উত্তোলন করে পাশের আরেকটি বাগানে পুনরায় পুঁতে রাখেন। পুলিশের অভিযানে রোববার দুপুরে ওই বাগান থেকেই রেজাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সবুজের শ্বশুর খোকন মোল্লাকেও আটক করা হয়েছে।
যশোর শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়কের বাসিন্দা ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম নিজ এলাকাতেই কাপড় ও টেইলার্সের ব্যবসা চালাতেন। এবং দোকানের পাশেই কামরুল ইসলামের বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। এখানে তার পাশের ঘর বসবাস করতেন একই এলাকার রিপন হাওলাদার ও সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা বাজার এলাকার সবুজ ওরফে রবিউল। একই বাড়িতে ভাড়া থাকার সুবাদে তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে রেজাউল ব্যবসাথ জন্য পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া বাড়িসহ দুই শতক জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এরপর সবুজ ও রিপনের সহায়তায় জমিসহ বাড়িটি ২১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। ওই টাকা হস্তান্তরের কথা বলে গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে রেজাউলকে মোবাইলে ডেকে নেয় সবুজ ও রিপন। এরপর থেকে রেজাউল ইসলাম আর বাড়ি ফেরেনি। এ ঘটনায় তার পরিবার জিডি করেন। খোঁজ না পেয়ে এক সপ্তাহ পর অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে সবুজ, রিপনসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত জানান, পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরণকারীদের সনাক্ত করে। এরপর অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সবুজ ও রিপনকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা রেজাউলকে অপহরণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে, সেখান থেকেই বেরিয়ে আসে ঘটনার মূল রহস্য। তিনি আরো বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্রিফ করবেন।