বাংলার ভোর প্রতিবেদক
অবশেষে যৌথবাহিনীর পাহারায় বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভা হয়েছে। বুধবার দুপুর একটায় কলেজ অধ্যক্ষের রুমেই এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে নির্ধারিত দিনে সভা না হওয়ার বিষয়ে এডহক কমিটির নতুন সভাপতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে এডহক কমিটির সভা হওয়ার কথা ছিল। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও কৃষকদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূবের অনুসারীদের মহড়া ও মিছিলে সভা পণ্ড হয়ে যায়। এতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় ক্যাম্পাসে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
জানা গেছে, রাজনীতিক পটপরিবর্তনের পর বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজে এডহক কমিটির সভাপতি করা হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও কৃষকদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূবের মনোনীত প্রার্থী ও তার ভাগ্নে আসাদুজ্জামানকে। গত ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের পরিদর্শকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আসাদুজ্জামানের মনোনয়ন পরিবর্তে সভাপতি করা হয় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নূরে আলম সিদ্দিকীকে। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন মঙ্গলবার বর্তমান সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকীকে নিয়ে পরিচিত সভার আহ্বান করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন টিএস আইয়ূবের অনুসারী বিএনপি নেতারা। এ কারণে টিএস আইয়ূবের মদদে আতঙ্ক সৃষ্টি করে মঙ্গলবারের নির্ধারিত সভা পন্ড করে দেয়। যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বাংলার ভোরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম। যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষকে সময় বেঁধে দেন বুধবার দুপুর একটার মধ্যে সভা সম্পন্ন করতে। পাঁচ সদস্যের এড কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন, শিক্ষক প্রতিনিধি আলমগীর সিদ্দিকী, বিএনপি নেতা আব্দুল হাই মনা ও মাসুদ আলম টিপু। আব্দুল হাই মনা অসুস্থতার কারণে সভায় হাজির হতে পারেনি। মাসুদ আলম টিপু দুরে থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে আসতে পারেন নি। তবে উভয় সভা করার জন্য সম্মতি দিয়েছেন বলে জানাগেছে।
এ বিষয়ে বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, কলেজের নতুন এডহক কমিটির সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকীর নির্দেশে ৩১ ডিসেম্বর নিয়ম অনুযায়ি সভা আহবান করা হয়। গত ২৯ ডিসেম্বর সভার চিঠিও করা হয়। আমি মঙ্গলবার সভা করার জন্য নির্ধারিত সময়ে কলেজে আসি। কলেজ অভ্যন্তরে ডোকার আগেই পরিবেশটা আমার কাছে ভালো মনে হয়নি। যে কারণে আমি রুমে প্রবেশ না করে পাশের এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। পরে বুঝতে পেরেছি সভা না করাটা ভুল হয়েছে। সভায় পাঁচ সদস্যের মধ্যে তিনজন উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুইজন সম্মতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি সভাপতির কাছে ক্ষমাও চেয়েছি’।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটির নতুন সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ তার ভুল স্বীকার করে নিজ তাগিতেই বুধবার সভা করেছেন। অনুপস্থিত দুই সদস্যর সাধে মোবাইলে যোগাযোগ করে তাদের সম্মতি নেয়া হয়েছে। সভায় বিদ্যোৎসাহি ও দাতা সদস্য নির্ধারণ, ব্যাংক অপারেটর পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া পূর্ববর্তী সভার বাকি সব বিষয় আগামী সভায় আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ বিষয়ে বাঘারপাড়া থানার ওসি আব্দুল আলীম জানিয়েছেন, নিয়মিত টহলের অংশ হিসাবে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ আজ ডিগ্রি কলেজ এলাকায় সেনাবাহনীর সাথে ছিলো। কলেজের সভার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version