বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ঝড়ে সড়কের পাশে উপড়ে পড়ে গাছ। সেই গাছ অপসারণ নিয়ে জটিলতায় আট মাস ধরে ভোগান্তির শিকার যশোরের অভয়নগরের নূরবাগ-সুন্দলী এলাকার মানুষ। গাছ উপড়ে সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ঘটছে দুর্ঘটনাও। কিন্তু জেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের ঠেলাঠেলিতে সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আট মাস আগে যশোরের অভয়নগরে ঝড় ও বৃষ্টিতে নূরবাগ-সুন্দলী সড়কের কয়েকটি গাছ মৎস্যঘেরে উপড়ে পড়ে। এতে ওই সড়কের কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল শুরু করে যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়েন মৎস্যঘের মালিকসহ এলাকাবাসী। কিন্তু আট মাসেও গাছ অপসারণের উদ্যোগ নেয়নি জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদ বলছে, অভয়নগর উপজেলা প্রশাসনকে গাছ অপসারণে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু গাছ অপসারণে জেলা পরিষদ থেকে লিখিত বা মৌখিক কোনো আবেদন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী। এদিকে, উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, উপড়ে পড়া গাছ অপসারণ হলেই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামের বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যঘের মালিক আব্দুর রউফ মোল্যা বলেন, ‘২০২৪ সালের বর্ষা মৌসুমে রাস্তার পাশের একটি শিরিষ গাছ আমার মাছের ঘেরে উপড়ে পড়ে। এতে রাস্তার কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে বড় গর্ত তৈরি হয়। তারপর থেকে ওই স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। এছাড়া সুন্দলী বাজারের কাছে একটি মাছের ঘেরে তিনটি বাবলা গাছ উপড়ে পড়ে। বারবার জানানোর পরও জেলা পরিষদ গাছগুলো অপসারণ করেনি।’
তিনি আরও বলেন, গাছ পড়ে থাকায় দীর্ঘ আট মাস ধরে ঘেরে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। মাছের খাবার দেয়া ও দেখভালে সমস্যা হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গাছগুলো দ্রুত অপসারণ করাসহ মৎস্যঘেরের ক্ষতিপূরণ দাবি জানান তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আট মাস অতিবাহিত হলেও উপড়ে পড়া গাছগুলো কেনো অপসারণের উদ্যোগ নিচ্ছে না জেলা পরিষদ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল হুদা বলেন, ‘জেলা পরিষদের একটি শিরিষ ও কয়েকটি বাবলা গাছ উপড়ে পড়ায় নূরবাগ-সুন্দলী সড়কের কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়। গাছগুলো অপসারণের জন্য জেলা পরিষদে জানানো হলেও তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নেননি। অপসারণ করা হলেই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে। গুরুত্বপূর্ণ নূরবাগ-সুন্দলী সড়ক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দের প্রতিবেদন জমা দেওয়া রয়েছে।’
জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘নূরবাগ-সুন্দলী সড়কে উপড়ে পড়া গাছগুলো অপসারণে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে। দাপ্তরিক জটিলতার কারণে সমস্যা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, ‘উপড়ে পড়া গাছ অপসারণের বিষয়ে জেলা পরিষদ কোনো লিখিত বা মৌখিক আবেদন করেনি। তারা যা বলছেন তা সঠিক নয়। গাছ অপসারণে জেলা পরিষদকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’