স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ

যশোর শহরের বেজপাড়া তালতলা এলাকার জান্নাতুল ফোয়ারা অন্তরা ও জান্নাতুল ফাতেমা অনন্যা দুই বোন মিলে গড়ে তুলেছেন খাবারের দোকান। অস্থায়ী এই খাবারের দোকান প্রতিদিন শহরের শামসুল হুদা স্টেডিয়াম রোডে বসছেন। একটা ভ্যানগাড়ি প্রস্তুত করে সুচারুভাবে সাজিয়ে সুন্দর পরিবেশে বিকেল ৫ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত দুই বোন মিলে ক্রেতাদের মাঝে খাবার পরিবেশন করছেন।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারে ডিপ্লোমা করা অন্তরা পড়াশুনা শেষে নিজ শহরে থেকে চাকরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মনের মত চাকরি না পাওয়াতে ছোট বোন অনন্যাকে সাথে নিয়ে শুরু করেন স্ট্রিট ফুডের ব্যবসা। প্রায় এক লাখ টাকা মূলধন নিয়ে ‘খাই খাই’ দ্যা ইয়াম্মি বাইটস নামে ভ্রাম্যমাণ দোকান তৈরি করেন। অনেক দিনের পরিকল্পনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া। ছোট বোন জান্নাতুল ফাতেমা অনন্যা সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি পড়াশুনার পাশাপাশি বড় বোনের সাথে খাবারের দোকানে কাজ করছেন। রাস্তার পাশে খাবারের ব্যবসা শুরু করা নিয়ে তাদের ভিতরে কোনো সংকীর্ণতা কাজ করেনি। বরং অনেক দিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারাতে তাদের বেশি আনন্দ।

অন্তরা, অনন্যার খাই খাই দোকানে কম মূল্যে মানসম্মত খাবার তৈরি হচ্ছে। খাবার নিজেরাই তৈরি করে নিজেরাই পরিবেশন করছেন। এই দোকানে পাওয়া যাচ্ছে চিকেন ফ্রাই, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, নাচোস, বার্গার, মম, মিড বক্সসহ নানা রকম মুখোরোচক খাবার। খুব দ্রুত সময়ে মধ্যে মাশরুমের তৈরি যাবতীয় খাবার এখানে নায্যমূল্যে পাওয়া যায়।

জান্নাতুল ফোয়ারা অন্তরা বলেন, আমি বিসিএমসি কলেজ থেকে টেক্সটাইলে ডিপ্লোমা করেছি। আপাতত পড়াশুনা শেষ। যশোরের ভিতরে তেমন সুবিধাজনক কোনো চাকরি পাচ্ছিলাম না। ছোট বোনকে সাথে নিয়ে এই খাবারের দোকান করেছি। রাস্তার পাশে বসে খাবার বিক্রি করা নিয়ে আমরা হীনমন্যতায় ভুগছি না। বরং নিজে কিছু করার চেষ্টা করছি বলে নিজের কাছেই খুব ভালো লাগছে। পরিবার থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছি। ক্রেতাদের উপস্থিতিও আশানুরূপ ভালো।

জান্নাতুল ফাতেমা অনন্যা বলেন, পড়াশুনার পাশাপাশি বড় বোনকে দোকানের কাজে সহযোগিতা করছি। আমাদের দুই বোনের অনেক দিনের স্বপ্ন ছিলো নতুন কোনো কিছু করার। সেই সুবাদে এমন ব্যতিক্রম কিছু করা। আসলে রাস্তার পাশে এমন দোকান নিয়ে বসতে পারাটা সাহসের বিষয়। আমরা লোকলজ্জার ভয় না করে কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের মত করে নিজেদের গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। বন্ধু বান্ধবদের অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি। ওরা দোকানে আসছে উৎসাহ দিচ্ছে। ওদেরও একটা বসার মত জায়গা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version