পাটকেলঘাটা সংবাদদাতা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক অবদান ছিল। বহু লোক জীবন দিয়েছে, বহু লোক নিহত হয়েছে, মামলা হয়েছে। সেই আন্দোলন আমরা তরুণ ছাত্রদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। আমাদের সন্তানরা সেই আন্দোলন জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে সফল করেছে। আমরা আনুপাতিক হারে নির্বাচন চাই। যতটুকু সময় লাগে দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচনী ম্যাপ তৈরি করুন।
সোমবার বিকালে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে। ফ্যাসিবাদের লোকেরা জামায়াতে ইসলামীকে যেভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, তাদের মুখেও এখন ফ্যাসিবাদের সেই গন্ধ পাওয়া যায়। এই পথ সর্বানাশা পথ। ফ্যাসিবাদ যুগের অবসান হয়েছে। একটি জাতীয় ঐক্যের ভিক্তিতে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আসুন অনৈক্য-বিভেদ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী কোনো ভূমিকা না নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য আগস্টের মূল চেতনাকে ধারণ করে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে এগিয়ে যাই।
তিনি বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বাংলাদেশে সংঘটিত দিনের ভোট রাতে দেয়া, নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানিসহ যত অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সবকিছুই জালিম শেখ হাসিনার নির্দেশে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। জুলাই-আগস্টে যারা জীবন দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন আমরা তাদের কাছে ঋণী। তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আজকে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি, যাদেরকে শহীদ করা হয়েছে তারাও সেই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। সুতরাং সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। জুডিশিয়াল ক্যু করে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, কামরুজ্জামান, মীর কাসেম আলী এবং আব্দুল কাদের মোল্যাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, শেখ হাসিনা আদালতের উপর বন্দুক রেখে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে, সেখান থেকে তিনি কেয়ার টেকার সরকারের বিধান বাতিল করেছিলেন। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর আদালতে আমরা রিট করে তত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করেছি। আমরা শুনানি করেছি, আমরা সুবিচার পেয়েছি। আদালতে কেয়ার টেকারের বিধান অক্ষুণ্ন রেখে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সেখানে কেয়ার টেকার সরকার সংযুক্ত করা হয়েছে।
সম্মেলনে তালা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মো. মফিদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহা. ইজ্জতউল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, নায়েবে আমীর ডা. শেখ মাহমুদুল হক, সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমার, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গাজী সুজায়েত আলী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ওমর ফারুক, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও শিবিরের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, কলারোয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা কামরুজ্জামান, কেশবপুর উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মোক্তার আলী, মাওলানা কবিরুল ইসলাম, শিবির সভাপতি আল মামুন প্রমুখ।