কালীগঞ্জ সংবাদদাতা

শিবলী নোমানী। একাধারে ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের মুসলিম বিবাহ সম্পন্নের কাজী। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। তবুও চলছে মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রার কাজ। পলাতক থেকেও তিনি বিয়ের কাজ কিভাবে সম্পন্ন করছেন এটা নিয়ে জনমনে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

শিবলী নোমানী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার আড়পাড়া এলাকার মোমিন মৌলভীর ছেলে। তার বাবা ছিলেন একজন চিহ্নিত রাজাকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন শিবলী নোমানী। পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের এই কাজীর বিরুদ্ধে শিবির কর্মী আবুজর গিফারী ও শামীম রহাসেন হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি এখনো জামিন লাভ করেননি। তারপরও তার এই কাজী অফিসে বিবাহ সম্পন্ন হচ্ছে নিয়মিত। শিবলী নোমানী বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন শহরে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো শিবলী নোমানী।

শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড মসজিদ মার্কেটের ২য় তলায় অবস্থিত শিবলী নোমানীর কাজী অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তার ম্যানেজার বজলুর রহমান একটি চেয়ারে বসে আছেন। তিনিই মূলত সবকিছু দেখাশোনা করেন। তবে সেখানে কাজীর চেয়ারে অন্য একজনকে বসে থাকতে দেখা গেছে। এই বিয়ে পড়ানোর কাজ করেন শিবলী নোমানীর ছোট ভাই মনিরুজ্জামান মিঠু। তিনি বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বিয়ে পড়ানোর কাজ করেন।

শিবলী নোমানীর কাজী অফিসের ম্যানেজার বজলুর রহমান জানান, বিয়ে যে কেউ পড়াতে পারেন। বিয়ে রেজিস্ট্রির কাজ করেন শিবলী নোমানী। কয়েকটি বিয়ে পড়িয়ে একসাথে সেই সকল কাগজ পত্র স্বাক্ষর করানোর জন্য শিবলী নোমানীর কাছে পাঠানো হয়। তিনি স্বাক্ষর করে দেন। বিয়ের কাজ খুব কম। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ২০টির মতো বিবাহ সম্পন্ন করেছেন তারা।

তবে এ ব্যাপারে জানতে কাজী শিবলী নোমানীর মোবাইলে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, শিবলী নোমানী দুই শিবিরকর্মী হত্যাসহ ৫টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সে পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্ট্রার সাব্বির আহমেদ জানান, কাজী পলাতক থাকার বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে দেখে ওই কাজী যদি পলাতক থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Share.
Exit mobile version