বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ শাসনের নামে শোষণ করতে গিয়ে দেশে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। তারা শুধু শারীরিকভাবে আঘাত দেয়নি। মানুষের মান ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করছে। তারা মানুষের রিজিক নিয়ে টানাটানি করেছে। আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে এই দেশটা ইজারা দিয়েছিল। দেশ স্বাধীনের পর আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দিতে পারেনি। সেই কারণেই তার মূল্য আমাদের পরিশোধ করতে হচ্ছে। করে যেতে হচ্ছে।’
বুধবার রাতে যশোর শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত সুধী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। সব গুন্ডাপান্ডা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একেবারে শেষ করে দিয়েছে। আমাদের সন্তানেরা লেখাপড়া করবে, নৈতিক শিক্ষায় উৎকর্ষ সাধন করবে। যার ফলে শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে যাওয়ার শেষেই তাদের কাজ হাতে চলে আসবে। তাদের কারও করুণার পাত্র হয়ে থাকতে হবে না। এখন সার্টিফিকেটের নামে যে কাগজগুলো ধরিয়ে দেওয়া হয়, অনেকেই সেই কাগজগুলো আগুনে ধরিয়ে দেয়। আমরা আগামির বাংলাদেশে কাগজের সার্টিফিকেট দিবো না; কোয়ালিটির সার্টিফিকেট তুলে দিতে চাই। আমরাই সেই শিক্ষাব্যবসা তুলে দিবো আগামির প্রজন্মের হাতে।’
সুধী সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যশোর জেলা শাখা। জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম রসূলের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ভারত আসলো বন্ধুরবেশে, শুরু করে দিলো ডাকাতি। এ কেমন বন্ধুত্ব। ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণে সব অস্ত্রই তারা নিয়ে গেছে। ৫৩ বছর ধরে আমাদের প্রাণের বন্ধু সেই গুলির একটি খোসাও ফেরত দেয়নি। এ কি ধরণের বন্ধুত্ব!’
তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস নিয়ে মোদীর টুইট বাংলাদেশকে ছোট করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ছয় লাইনের একটি টুইট করেছে, সেখানে একটি লাইনেও বাংলাদেশের নাম নেই। এটা নাকি ভারতের বিজয় দিবস। এ দেশের বুদ্ধিজীবীরা স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে এতোদিন চিৎকার করেছেন, তারা মোদির এ বিষয়ে কোন কথা বলেনি, প্রতিবাদ জানায়নি। জামায়াত ইসলামি তার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করেছে। আপনারা কেন চুপ ছিলেন? আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্তি পেলেও দিল্লির কাছে জিম্মি হয়েছিলাম। যদি এই দেশ স্বাধীন দেশ হয়; তাহলে আগামিতে বাংলাদেশ তার মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকবে। সন্তানদের রক্তের বিনিময়ে নতুন করে স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করবো। তারা বলছে, সামাজিক বৈষম্য দূর করতে চাই, স্বাধীন ভাবে সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই, তাদের সকল স্লোগানের সঙ্গে আমরা একমত। আগামির বাংলাদেশ এই তরুণদের হাতে তুলে দিবো। তাদের রক্ত নষ্ট হয় নাই, তাদের হাতেই দেশটা নিরাপদ। সেই দেশ বিশ্বের দরবারে নজির স্থাপন করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।বক্তব্য রাখেন জামায়াতের যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, সহকারী পরিচালক মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: আহসান হাবিব, প্রেসক্লব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্ত্তজা ছোট, সাংবাদিক ও গবেষক বেনজিন খান, জেলা সূরা সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ আবু জাফর সিদ্দিকী, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস, কর্মপরিষদ ও শুরা সদস্য নূর-ই-আলী নূর মামুন।