কাজী নূর
ফের দাম বাড়ল আলুর। এবার ৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ঠেকেছে ২৮ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন নতুন আলু বাজারে না ওঠা পর্যন্ত দাম আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে পেঁয়াজের দাম। অপরদিকে গত সপ্তাহে বৃদ্ধি পাওয়া সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। সবরকম সবজিতে কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। কমেছে মাছের দাম। তবে মাছ বাজারে মেলেনি ক্রেতা ভিড়।
শুক্রবার যশোরের হাজী মোহাম্মদ মহসিন রোড বড়বাজার ঘুরে এসব তথ্য মিলেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জানতে চাইলে বিক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, যশোর অঞ্চলের হিমাগারগুলোতে আলু নেই বললেই চলে। বিধায় উত্তরবঙ্গ থেকে আসা আলু এখন এ অঞ্চলের ভরসা। নতুন আলু বাজারে না ওঠা পর্যন্ত দাম আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান তিনি। জামাল হোসেন আরো বলেন, বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচা মরিচ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, আদা ১৬০ কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিচুড়ি ৮০ টাকা, মেটে আলু ৭০ টাকা, ফুলকপি ৭০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, শালগম ৬০ টাকা, মুলো ৪০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০ টাকা, জলপাই ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৮০ টাকা, মানকচু ৫০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, কুমড়ো ৪০ টাকা, কুশি ৫০ টাকা, কলা ৩০ থেকে ৫০ টাকা, ডাটা শাক ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা, ঢেরস ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সবুজ শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা আটি ও লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা তানভীর হাসান সানি দৈনিক বাংলার ভোর‘কে বলেন, গতকাল পর্যন্ত তরকারির দাম বেশি ছিল। আজ বাজারের আড়তগুলোতে সবজির সরবরাহ বেশ ভালো। সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশকিছু সবজির দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানান বিক্রেতা।
বাজার করতে আসা একটি বেসরকারি কোম্পানির বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন মুসা বলেন, শীতকালীন নানা সবজিতে বাজার ভরা। কিন্তু বাজার করতে এসে যে দামে সবজি কিনছি এই মৌসুমে এটা প্রত্যাশিত নয়। তার উপর আলুর দাম ২০ থেকে ২৮-এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বিক্রেতার কাছ থেকে জানলাম, কাল আবার মাল ঢুকলে আলুতে ২/৫ টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত সরবরাহ ও দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কম থাকলেও ক্রেতাদের ভিড় নেই। অনেক বিক্রেতাকে খোশ গল্প বা মুঠোফোনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে, চাষের কৈ ১৮০ টাকা, বাটা ১৩০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ টাকা, নাইলোটিকা ১৫০ টাকা, টাকি ৪৮০ টাকা, সাড়ে তিন কেজি সাইজের রুই ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, একই সাইজের কাতলা ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৭০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১০০০ টাকা, পুঁটি ২০০ টাকা, পাবদা ৩৪০ টাকা, টেংরা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৩০ টাকা, খলসে ৪৫০ টাকা, মায়া ৩০০ টাকা, চাপলে ৪০০ টাকা, তিন পিসে ১ কেজি সাইজের ইলিশ ১০০০ টাকা, ৪ পিসে ১ কেজি সাইজের ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতা রতন বিশ্বাস বলেন, আমার বাড়ি নড়াইল জেলায়। রোজ সকালে নানা পদের মাছ নিয়ে যশোর বাজারে আসি। কিন্তু আজ বাজার খারাপ। মাছের দাম কম সত্বেও তেমন বিক্রি নেই। ছুটির দিন হিসেবে শুক্রবার মাছের বাজার থাকে ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা। কিন্তু আজকের চিত্র দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন বাজার পরিস্থিতি।
বাজার করতে আসা শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড এলাকার বাসিন্দা চাকরিজীবী এমদাদুল হক বলেন, আসলে আমি সবজির বাজার করতে এসেছিলাম। মাছের দাম কম পাওয়ায় পাবদা, হরিণা চিংড়ি ও বাটা মাছ কিনলাম।
মুদি পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে বর্তমানে খোলা সয়াবিন তেল ১৮৮ থেকে ১৯০ টাকা কেজি, বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা লিটার, পাম তেল ১৭০ টাকা, সরিষার তেল ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আটা ৪৬ টাকা, ময়দা ৬০ টাকা, দেশি মসুরি ডাল ১৫০ টাকা, মোটা মসুরি ১১০ টাকা, ছোলার ডাল ১২০ টাকা, মুগ ডাল ১৬০ টাকা, সাদা চিনি ১০৫ টাকা, লাল চিনি ১২০ টাকা, জিরে ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার চাল চান্নী ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে, মিনিকেট ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বাসমতী ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, স্বর্ণা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আটাশ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চাল বিক্রেতা মা লক্ষী ভান্ডারের মালিক কালীপদ পাল বলেন, দীর্ঘদিন যাবত চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আপাতত বাজার বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই। তবে চালের দাম কম থাকলেও তেমন বিক্রি নেই বলে জানান কালীপদ পাল।
ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে লাল ডিম গ্রেড অনুযায়ী ৩৬ থেকে ৪৪ টাকা, সাদা ডিম ৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, এ মৌসুমে ডিম নষ্ট হয় কম। ফলে ঘাটতিও কম হয়। এজন্য দাম সহনশীল পর্যায়ে থাকে।
এদিকে, মাংসের বাজারে সকল প্রকার মুরগি, গরু ও খাসির গোশের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version