বাংলার ভোর প্রতিবেদক
তপস্যার চেয়ে প্রেম উত্তম- একথাই অনুরনিত হয়েছে কথাসাহিত্যিক বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিনী’ নাটক জুড়ে। ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ সাহিত্য পাঠচক্র সংগঠনের উদ্যোগে আজ শনিবার সন্ধ্যায় তপস্বী ও তরঙ্গিনী গ্রন্থ নিয়ে পাঠচক্রের আলোচকেরা এসব কথা বলেন। যশোর শহরের স্টেডিয়ামপাড়ায় ‘নির্বাচিত’ নামে একটি বইয়ের দোকানে এই পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়। দেবদারু গাছের পাতা, হলুদ গাদা ও গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে এবং মাটির ঘটে রজনীগন্ধা, গোলাপ আর জারবেরা ফুল রেখে প্রতীকী তপোবন সৃষ্টি করে প্রতিবেশ অধ্যয়নের আয়োজন করা হয়।আলোচনার মাঝে পাঠচক্রের সদস্য লিমা খাতুন ও অপু দেবনাথ অভিনয়ের মাধ্যমে নাটকের নায়ক ঋষ্যশৃঙ্গ ও নায়িকা তরঙ্গিনী চরিত্রে অভিনয় করে কাহিনীর অংশ বিশেষ তুলে ধরেন। আলোচনা করেন যশোর সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোফাজ্জেল হোসেন, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আহসান মোহাম্মদ ইকরামুল কবীর, সাংবাদিক এইচ আর তুহিন ও মনিরুল ইসলাম, কবি মামুন আজাদ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. শাহ্জাহান কবীর। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস বিশ্বাস। সংগীত পরিবেশন করেন মুস্তাহিদ হাসান শাকিল ও ফাহিম আল ফাত্তাহ। বক্তারা বলেন, ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ নাটকে বুদ্ধদেব বসু পৌরাণিক কাঠামো ভেঙ্গে নারী-পুরুষের জীবনে আধুনিক গুণাবলী সঞ্চার করেছেন। সাধনার ইতিহাসে মুনিদের নারীকেন্দ্রিক সাধনা স্খলনের কথা কে না জানে। মুনি বিভাণ্ডক নিজে অপ্সরী উর্বশী দ্বারা পতিত হলে রাগে-ক্ষোভে অভিমানে নিজের সন্তান ঋষ্যশৃঙ্গকে গড়ে তুলেছিলেন নারীচেতনহীনভাবে। কিন্তু এত সতর্কতার পরও নারী দ্বারা সেই ঋষ্যশৃঙ্গের স্খলনেরই দ্বান্দ্বিক অভিঘাতে বিভাণ্ডক বিপর্যস্ত হয়ে উঠছিলেন। সত্যি কী নারী সাধনার প্রতিবন্ধক? নারী-পুরুষীয় মানবিক টানাপড়েনের এমন এক দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের কাহিনি দৃশ্যমান হয়ে উঠে পাঠচক্রের আলোচনা ও নাট্যাভিনয়ের পরতে পরতে।

 

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version