বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ভারতীয় উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনারের কার্যালয় ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জেলা বিএনপি। বুধবার বিকেলে শহরের লালদীঘিস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘ভারত যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, তার যথাযথ জবাব ভারতকেই দিতে হবে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের কর্মকান্ডে মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনার নয়, তাদের নিজেদের পতন হয়েছে। ভারত কেবলমাত্র বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন দেয়নি, সমগ্র বাঙালির হৃদয়ে আগুন দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে ভারতে এই কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেটা প্রতীয়মান। যেকোন মূল্যে শেখ হাসিনার দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরো বলেন, ভারত নিজেদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সমর্থন দেওয়ার মধ্যদিয়ে তারা সেটি ভুল প্রমাণ করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতে অবদান এ দেশের জনগণ কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করে। কিন্তু মহান স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর দেশের স্বার্থ কতটা বিকিয়ে দিলে কিংবা সীমান্তে ফেলানির মত নিরীহ নিরাপরাধ বাঙালি হত্যা করলে ভারতের ঋণ পরিশোধ হবে?

ভারতে ন্যাক্কারজনক ঘটনার জেরে দেশের মধ্যে কেউ যাতে অহেতুক উত্তেজনা ছড়াতে না পারে, তার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক তীর্থভূমি। এই দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলের। এখানে সংখ্যা গুরু কিংবা সংখ্যালঘু বলতে কেউ নেই। আমাদের একটি পরিচয় আমরা বাংলাদেশী। এই ভূখণ্ডের বাইরে আমাদের কোন পরিচয় নেই। কোন মুসলিম অন্য কোন ধর্মের প্রতিপক্ষ ভাবতে পারে না। নব্বই দশকে ভারতের বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর যেভাবে এই যশোর তথা সমগ্র বাংলাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীরা সনাতন ধর্মের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছিল। ঠিক একইভাবে ৫ আগস্টের সন্ধ্যা থেকে আজ অবধি পর্যন্ত সনাতন ধর্মের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে। যাতে কোন দুষ্কৃতিকারী কোন কিছু ঘটাতে না পারে।

অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দলীয় নেতাকর্মীদের কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরও তার প্রেতাত্মারা এই সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের অপকর্মের যথাযথ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই সমাজে ফিরে আসার কোন সুযোগ নেই। কেউ যদি তাদেরকে এই সমাজে ফিরে আসার সুযোগ দেয়, তাহলে সেও ফ্যাসিস্টের দোসর হিসেবে বিবেচিত হবে।

এ সময় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। পরে দলীয় কার্যালয় থেকে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। হাতে ছোট বড় লাল সবুজের পতাকা হাতে নিয়ে নেতাকর্মীরা পুরাতন পৌর ভবনের সমানের সড়ক, চৌরাস্তা মোড়, আর এন রোড হয়ে মনিহার এলাকায় গিয়ে মিছিলটি শেষ করেন।

বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, অ্যাড. মো. ইসহক, আব্দুস সালাম আজাদ, মারুফুল ইসলাম, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, সিরাজুল ইসলাম, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পদাক আঞ্জুরুল হক খোকন, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি প্রমুখ।

Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Home
News
Notification
Search
Exit mobile version