কালীগঞ্জ সংবাদদাতা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ঈদুল আযহা উপলক্ষে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের চাল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গত ১৫ জুন বিকেলে এই চাল বিক্রি করা হয়েছে পাশর্^বর্তী মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের একটি দোকানে। শুক্রবার সকালে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, ঈদের দুই দিন আগে গত ১৫ জুন কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে ৪টি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমনে ২৬৪ বস্তা ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়া হয় মহেশপুরের খালিশপুরে। প্রতিটি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল ছিল। প্রতিটি বস্তা খাদ্য অধিদপ্তরের লেবেলযুক্ত। নিয়ে যাওয়ার সময় একটি গাড়ির চালকের কাছে তিনটি বিলি আদেশ (ডিও) পাওয়া গেছে।
যেগুলো কালীগঞ্জ উপজেলার ৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর, ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়া ও ৮নং মালিয়াট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খানের নামে বরাদ্দ করা।
গত ১২ জুন চালগুলো বরাদ্দ দেয়া হয় এবং এর মেয়াদ ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এর মধ্যে চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্করের জন্য ২.৫ মেট্রিক টন, চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার জন্য ৩ মেট্রিক টন ও আজিজুর রহমান খানের জন্য ২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।
উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে বের হওয়া এ চাল দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের। ঈদের আগে যে চালগুলো গরীব মানুষদের দেয়া হয়। আর এই চালগুলো কোরবানির ঈদের আগে দরিদ্র মানুষের মাঝে প্রদান করার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।
ভিডিওতে এক গাড়ির চালক বলেন, কালীগঞ্জ খাদ্য গুদাম থেকে চাল নিয়ে মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারের দীপু দাদার দোকানে নিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার গাড়িটাই শেষ। এর আগে তিন গাড়ি গিয়েছে। মোট ৪ গাড়ি চাল বেরিয়েছে। প্রতি গাড়িতে ৬৬ বস্তা চাল।
ভিডিও ধারণ করা যুবক রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, গত শনিবার (১৫ জুন) বিকেল ৫ টার দিকে সরকারি ভিজিএফের চাল নিয়ে যাওয়ার ভিডিওটি ধারণ করি। ৪টি গাড়িতে এ চাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বিশেষ বরাদ্দের এ চাল না বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
৪নং নিয়ামতপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ রনি লস্কর বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। খোঁজ নিচ্ছি।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মুঠোফোনে ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল হিজড়ার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ফোনে আমি কিছুই বলবো না। আপনি সরাসরি ইউনিয়নে আসলে সব বলবো।
কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহদী হাসান শিহাব বলেন, গত ১৫ জুন সরকারি বরাদ্দের চাল গুদাম থেকে দেয়া হয়েছে। ডিও লেটার দেখালে আমরা চাল প্রদান করি। এখন এই চাল কে কোথায় বিক্রি করেছে সেটা আমি জানি না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।