কালীগঞ্জ সংবাদদাতা
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ১৫% থেকে ২০% পর্যন্ত ঘুষ নে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে। এছাড়াও বাড়ির প্লান অনুমোদন করতেও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এই কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্য থেকে রেহাই পেতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীকে অন্যত্র বদলীর জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা। উপজেলার ৬নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হিজরা, ৭নং রায়গ্রাম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবু তাহের, ৮নং মালিয়াট ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান খান ও ১০নং কাষ্টভাঙ্গা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, বর্তমান উপজেলা প্রকৌশল মো. আহসান হাবীব কালীগঞ্জ উপজেলাতে যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ১৫% থেকে ২০% অর্থ অগ্রিম দাবি করায় প্রাক্কলনসহ চলমান উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ইউনিয়ন থেকে যে সকল ব্যক্তি তাদের বাড়ির প্লান অনুমোদনের জন্য আসে তাদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন।
এছাড়াও উপজেলা প্রকৌশলীর দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইমরান হোসেন নামে ঠিকাদার। তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ১নং সুন্দরপুর প্রাইমারি স্কুলের প্রাচীর নির্মাণের জন্য ২২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭৬২ টাকার দরপত্র আহবান করা হয়। তিনি জাকারিয়া এণ্ড সন্স’র নামে কাগজ পত্র দাখিল করে টেণ্ডারে অংশগ্রহণ করেন। টেণ্ডার ওপেনিং এর ২ মিনিট আগে টেণ্ডার বক্স না খুলেই উপজেলা প্রকৌশলী জানান কাজটি পেয়েছে রেখা কনস্ট্রাকশন। টেণ্ডার ওপেন করার আগেই কিভাবে একজন ঠিকাদার কাজটির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। টাকার বিনিময়ে তিনি কাজটি রেখা কনস্ট্রাকশনকে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার জানান, এক ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টেণ্ডার সংক্রান্ত বিষয়ে তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে কার্যাদেশ প্রদান করেছেন। তার ব্যবহারও খুব খারাপ।
আরেক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, টাকা ছাড়া তিনি কোন বিলেই স্বাক্ষর করেন না। ৫ আগস্টের পরে এমন ঠিকাদারকে ওএসডি করে রাখা উচিৎ। তাকে এখান থেকে অন্যত্র বদলি না করলে উন্নয়নকাজ ব্যাহত হবে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব বলেন, কেউ এমন অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারবে না। একটা চেয়ারম্যানকে ডাকেন। সবই ফালতু অভিযোগ।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম বলেন, একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।