কেশবপুর সংবাদদাতা:
কেশবপুরে আঁখের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আঁখ চাষ করে অনেক কৃষক এখন সাবলম্বী হয়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লতারি জরা ঈশ্বরদী-১৬ ও গ্যান্ডারি জাতের আঁখ চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় দিনে দিনে আঁখ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে আঁখের আবাদ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে আঁখ চাষ করেছেন কৃষকরা।
যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের বাদুড়িয়ায় বসে আঁখের সর্ববৃহত হাট। সড়কের দু’পাশ দিয়ে হাট বসায় যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে উপজেলার ত্রিমোহিনী, মঙ্গলকোট, বসুন্দিয়া,বাদুড়িয়া গিয়ে দেখা গেছে আঁখ ক্ষেতে আঁখ পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষকরা। ১৯৯৫ সাল থেকে উপজেলায় আঁখ চাষ শুরু করে অনেকেই এখন সাবলম্বী। যে কারণে এই অঞ্চলের কৃষকরা আঁখ চাষের প্রতি উৎসাহী হয়ে উঠেছেন। লাভ জনক হওয়ায় বাদুড়িয়া, মঙ্গলকোট, পাঁচপোতা, বসুন্তিয়া, রামকৃষ্ণপুর, বড়েঙ্গা,পাঁচারই, কেদারপুর, সাগরদাঁড়ী, টিটা মোমিনপুর, ঝিকরা, বেগমপুর, ত্রিমোহিনীসহ বিভিন্ন গ্রামে আঁখ চাষ হয়ে থাকে। স্থানীয় আঁখ চাষীরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে ২০০০ সালের দিকে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের বাদুড়ীয়া মোড় নামক স্থানে রাস্তার দুই পাশে আঁখের হাট বসিয়ে আঁখ বেচাকেনা করে আসছেন। এই হাটে যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদাহ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আঁখ কিনে নিয়ে যায়। ভালো বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় পাইকাররা এই সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিং করে থাকে। যার ফলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে।
মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বসুন্দিয়া গ্রামের আঁখ চাষী রহমত আলী, আহম্মাদ আলী, হাফিজুর রহমান নাজমুল হোসেন, মাঝেদাদা, ত্রিমোহিনী ইউনিয়নের চাদড়া গ্রামের ফারুক হোসেন, সোহাগ হোসেন এ প্রতিনিধিকে জানান, তারা বেশ কয়েক বছর ধরে আঁখ চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে আঁখ রোপণ থেকে শুরু করে কাটা পর্যন্ত এক লাখ টাকা খরচ হয়। আর তা বিক্রি হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। মঙ্গলকোট গ্রামের বাসুদেব জানান, আমি দুই বিঘা জমিতে আঁখ চাষ করেছি। এছাড়া আঁখ ক্ষেতে সহযোগী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ-রসুনসহ বিভিন্ন সবজি রোপণ করা যায়। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, উপজেলায় এ বছরে ৫০ হেক্টর জমিতে আঁখ চাষ হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তুহিন হোসেন বলেন, দক্ষিণবঙ্গের একটি বৃহত্তম আঁখের হাট বসে কেশবপুরের বাদুড়িয়া মোড়ে। বাজারের জন্য নির্ধারিত জায়গা না থাকায় সড়কের দু’পাশে আঁখ রেখে বেচা-বিক্রি করে। যার ফলে দুর্ঘটনা আশঙ্কা রয়েছে। মাঝে মাঝে যানজটের সৃষ্টি হয়। হাট কমিটির পক্ষ থেকে আবেদন পেলে ও আশ পাশে খাসজমি থাকলে বাজার স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।