কেশবপুর প্রতিনিধি
যশোরের কেশবপুর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ঘের মালিকরে হাতে হাজার হাজার কৃষক জিম্মি হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালী ঘের মালিকরা সময়মত বিলের পানি নিস্কাশন না করায় ৫৭ বিলের বোরো আবা বিলম্ব হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরে অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনে ঘের মালিকরা গরিমশি করায় এ শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কেশবপুর ও মণিরামপুর উপজেলার ২৭ বিল ছাড়াও পাঁজিয়া ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা, মনোহরনগর এলাকার বিলের বর্ষার অতিরিক্ত পানি কাটাখালির ৮ ব্যান্ড স্লুইস গেট দিয়ে এবং উপজেলার মঙ্গলকোট, সুফলাকাটি ও গৌরিঘোনা ইউনিয়নের ৩০ বিলের বর্ষার অতিরিক্ত পানি পাথরা খাল দিয়ে আপারভদ্রা হয়ে শ্রীনদীতে নিষ্কাশন হয়। দুই যুগ আগে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব বিল জবর দখল করে মাছের ঘের করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে আপারভদ্রা ও শ্রীনদীর তলদেশ ভরাট হতে শুরু করে। এর প্রভাবে ৫৭ বিলের জলাবদ্ধতা স্থায়ী আকার ধারণ করে। কৃষকদের উদ্ভাবনায় শুরু হয় স্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ কার্যক্রম। সেচ কার্যক্রমে ঘের মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়। এছাড়া, বিলম্বে সেচ কার্যক্রম শুরু করলে মাছের দামও বেশি পাওয়া যায়, মাছও বড় হয়। এজন্যে বিলের পানি নিস্কাশনে তারা সময়ক্ষেপণ করে থাকেন।
পানি নিস্কাশন কমিটির নেতা মহির উদ্দীন বিশ্বাস জানান, পাঁজিয়া-পাথরা বিলের পানি নিষ্কাশনে পাথরা সুইচ গেটের ওপর গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯ টি মেশিন দিয়ে ও বরুলি গেটের ওপর ২০টি স্যালো মেশিন দিয়ে পানি নিস্কাশন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। যা চলমান রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ টাকার ডিজেল ব্যয় হচ্ছে। কৃষকরে বোরো আবা করতে হলে এখনও ১৮/২০ দিন সময় লাগবে। বুরুলি ও পাথরা বিলে প্রায় ২‘শ ঘের মালিক রয়েছে। এসব বিলের কৃষকরা ইতোমধ্যে তারে ২৬ লাখ টাকা পরিশোধ করলেও ঘের মালিকদের ৩৫ লাখ টাকা এখনও পরিশোধ হয়নি। পানি নিষ্কাশন সম্ভব হলে পাঁজিয়া-পাথরা বিলের ২’শ একর ও বুরুলির বিলে ২‘শ ৫ একর জমিতে এবার বোরো আবা হবে। কৃষকরে সাথে ঘেরের পানি নিস্কাশনের শর্ত থাকলেও সারুটিয়া বিলের ঘের মালিক চেয়ারম্যান এসএম মুনজুর, হরিহর বিলের সিরাজ সরদার, মাদারডাঙ্গা বিলের ইসলাম সরদার ১৬ জানুযারি পর্যন্ত ঘেরের পানি নিষ্কাশন শুরু করেনি। পাঁজিয়া গ্রামের কৃষক নূরুল ইসলাম জানায়, প্রতিবছর ১৫ পৌষের ভেতর ঘেরের পানি নিস্কাশন করে কৃষকদের বোরো আবাদের শর্তে ঘের মালিকরা মাছের ঘের করেন। তিনি অভিযোগ করেন, চলতি বছর ঘের মালিকরা পানি নিষ্কাশনে বিঘাপ্রতি ১ হাজার ২শ’ টাকা করে দাবি করে। সেই হারে কৃষকরা টাকা পরিশোধ করলেও ঘের মালিকরা টাকা পরিশোধে গরিমশি শুরু করেছে। এনিয়ে ১৩ জানুয়ারি প্রভাবশালী ঘের মালিক চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ও চেয়ারম্যান এসএম মনজুরের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, চলতি বছর ১৪ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবারে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে আবা হয়েছে ২ হাজার ৮৩৩ হেক্টর জমিতে। এখন বোরো রোপণের উপযুক্ত সময়। সময় মত আবাদ সম্ভব না হলে ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
শিরোনাম:
- ভবদহ অঞ্চল : জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি পানিসম্পদ উপদেষ্টার
- জাদুকাটার খনিজ বালি পাথর চুরির হোতা ‘রানু’ মেম্বার ফের কারাগারে!
- সৌদি প্রবাসী হত্যা : আরো তিন আসামি গ্রেফতার
- মুক্তিপণের দাবিতে সুন্দরবনে ফের দুই জেলে অপহরণ
- দেবহাটায় বাস ও মহেন্দ্র সংঘর্ষে নিহত ১
- শহীদ আসিফের কবর জিয়ারত করলেন দেবহাটা ওসি
- পিতার জীবনের বিনিময়ে পুত্রের চাকরি !
- সাতক্ষীরা সীমান্তে তিন পিস স্বর্ণের বারসহ আটক ১