বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে লাখো জনতার মাহফিলে বিশিষ্ট ইসলামী স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ইসলামের আলোকে দেশ সাজাবো। কোন জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস এদেশে সৃষ্টি হতে দেয়া যাবে না। ১৫ বছরে দেশে প্রচুর লুটপাট হয়েছে। অন্য দেশ উন্নয়ন করতে ব্যস্ত তখন আমার দেশের সরকার লুটপাটে ব্যস্ত থাকেন। একদল যায়; আর এক দল এসে লুটে খায়। আমাদেরকে কোরআনের আলোকে দেশ গড়তে হবে।
শুক্রবার রাতে যশোর শহরের পুলেরহাটের আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ মাঠে আদ্-দ্বীন ফাউণ্ডেশনের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপি তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিনে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সন্তানদের কোরআনের শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। তাহলে ছেলেমেয়েরা বিপথগামী হবে না। প্রতিটি শিশুর হৃদয়ে আল্লাহর কোরআনের আলো জ্বালাতে হবে। তাহলে দেশ আর দুর্নীতি, সন্ত্রাসী তৈরি হবে না। সব আলোকিত মানুষ হবে ইনশাআলস্নাহ।
এদিকে যশোরসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে বাসে চড়ে, কেউ বা ট্রাক কিংবা পিকাপে, অনেকে পায়ে হেঁটে যশোরে শায়খ আহমাদুলস্নাহ ও ড. মিজানুর রহমান আজহারীর তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা যোগদান করেন।
শহরের পুলেরহাটের আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ মাঠে আয়োজিত তিন দিনব্যাপি তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) আলোচনা করেছেন আল্লামা মামুনুল হক ও আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) আলোচনা করেছেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী ও মুফতি আমির হামজা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে যশোর শহর, থানা থেকে শুরু করে খুলনা বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষেরা মাহফিলে আসেন। তবে সবাই শহরের আশপাশ দিয়ে গাড়ি রেখে তিন থেকে চার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে যান। এতে কানায় কানায় ভরে যায় মাঠ।
আদ্-দ্বীন ফাউণ্ডেশনের মানব সম্পদ কর্মকর্তা জাহেদ হোসাইন বাংলার ভোরকে বলেন, আদ্-দ্বীন ফাউণ্ডেশন শুধু ওয়াজ মাহফিলের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেনি। এখানে ইসলামী কৃষ্টিকালচার তুলে ধরা হচ্ছে। দেশের প্রখ্যাত লেখকদের বই পাওয়া যাচ্ছে বই মেলার স্টলে। গার্ডিয়ান, সত্যায়ন, বিন্দু, সিয়ানসহ ২২টি প্রকাশনী এখানে স্টল নিয়েছে। পড়াশোনার অভ্যাসের জন্য এ বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখানে শুধু ওয়াজ মাহফিল নয়; এখানে হজের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিনোদনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। শিশুদের জন্য ‘কিডস জোন’ রয়েছে।
আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের পাবলিক রিলেশনস অফিসার তরিকুল ইসলাম তারেক বাংলার ভোরকে জানান, দেশের প্রখ্যাত ছয় জন আলেম নিয়ে এটাই প্রথম কোন বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ ব্যতিক্রমী আয়োজনে জন্য আদ্-দ্বীন ফাউণ্ডেশনের নিজস্ব ১৫০ বিঘা জমিসহ আশেপাশের আরও ২০০ থেকে ৩০০ বিঘা জমি জুড়ে এ মাহফিলের মাঠ। ৮-১০ লাখ লোকের জন্য আলো, পানি বাথরুম ও ওজু খানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ২০টি এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে লাইভ দেখানো হয়েছে। মূল মাঠসহ আশেপাশে ৪টি মাঠে এ এলইডি স্ক্রিন রয়েছে। এছাড়া বিশেষ করে নারীদের বসার জন্য পুলেরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পুলেরহাট বালিকা বিদ্যালয় এবং আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ গেট এলাকায় স্থান করা হয়েছে।