নিজস্ব প্রতিবেদক
কর্মস্থল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি করেছেন জ্যেষ্ঠ চালক মফিজুর রহমান। গত ২৯ ডিসেম্বর গায়ে আগুন দেয়ার পর চলতি বছরের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
যবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যবিপ্রবি’র পরিবহন বিভাগের এক হেলপারের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেয়ার ঘটনায় পারিবারিক মামলায় হওয়ায় মফিজুর রহমানকে প্রায় ছয় মাস বসিয়ে রাখা হয়। এ সময় তাকে কোনো গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেয়া হয়নি। সম্প্রতি ‘জব অব নেচার’ পরিবর্তন করে তাকে অফিসের কাজে সংযুক্ত করতে চিঠি দেয়া হয়।
এদিকে দ্বিতীয় বিয়ের পর পারিবারিক অশান্তির মধ্যেও পড়েন মফিজুর। সবমিলিয়ে মানসিক চাপে তিনি ২৯ ডিসেম্বর রাতে বাড়িতে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে আগুন নিভিয়ে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে দ্রুত তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ জানুয়ারি রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে মৃত্যুর আগে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফেসবুক ভিডিওতে তিনি কর্মস্থলে ‘মানসিক নির্যাতনের’ অভিযোগ করেন এবং মারা গেলে যবিপ্রবি’র পরিবহন দপ্তরের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।
এছাড়া মফিজুরের গায়ে আগুন দেয়ার পর পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যবিপ্রবি’র ২২ জন চালক ও হেলপার।
অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলাম বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। ড্রাইভার মফিজুর রহমানের চরিত্র ভাল না। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হেলপারের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছে। এখন তার দুই স্ত্রী। এসব কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তাকে গাড়ি থেকে সরিয়ে এনে পরিবহন পুলের গাড়ির সুপারভিশন করার দায়িত্ব দেয়া হয়। রেজিস্ট্রারসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। মূলত পারিবারিক বিষয় নিয়ে কলহে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। পারিবারিক কারণে সে গায়ে আগুন দিতে পারে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন সহকর্মীর স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তাকে ‘গ্রাউন্ডস্’ করা হয়েছে। শুধু মফিজুর নয়; তিনজন চালকের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও যেহেতু তিনি সিনিয়র ড্রাইভার এ কারণে তাকে গাড়িগুলোর অফিসিয়াল সুপারভাইজারি করার দায়িত্ব দেয়া হয়। ফলে তার অভিযোগ সঠিক নয়। এরপরও যেহেতু অভিযোগ পাওয়া গেছে এজন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে, ড্রাইভার মফিজুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, বিশ^বিদ্যালয়কে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য মফিজুরের অবদান ছিল অপরিসীম। তার অসুস্থতার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনসহ সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে।
শিরোনাম:
- যশোরে নারী সিএসও ও পরিষেবা প্রদানকারীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে কর্মশালা
- সাবেক এমপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মাছ লুটের মামলা
- যশোরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন
- ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা অসহিষ্ণু আচরণ করে ছাত্র সমাজকে কলঙ্কিত করছে’
- যশোরে মাংস ও ডিমের দাম চড়া : নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পাতে আমিষের টান
- চার দশকে ‘হাজার কোটি টাকা’ জলে ভবদহের ৩৪১ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
- সাবেক এমপি রণজিৎ রায়, সাবেক এসপি আনিসসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- যশোরে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ’র জন্মদিন উদযাপন