কোটচাঁদপুর সংবাদদাতা
কোটচাঁদপুরে গ্রাম্য সালিশে ধর্ষণকাণ্ডে লাখ টাকা জরিমানায় মীমাংসার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার রাজপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় ভুক্তভোগী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক নারীকে প্রতিবেশি আমিরুল ইসলাম ফুঁসিলয়ে ধর্ষণ করে। এতে ওই নারী গর্ভবতী হয়ে পড়লে ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। একপর্যায়ে ধর্ষণ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগীর ভাইকে টাকার প্রলোভন ও হুমকি ধামকি দেয়া হয়। একই সাথে অভিযুক্ত আমিরুল ইসলামের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন ও ভাবী আঞ্জুরা খাতুন ভুক্তভোগীকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই বিচার দাবি করলে স্থানীয় পর্যায়ে গত ৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় মীমাংসার জন্য শালিস বৈঠক হয়। এতে ধর্ষকের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন শালিসকারী সাফা মাস্টার,কবির মন্ডল, আব্বাস আলী, সিরাজ মন্ডল নাগর, সাইদুল হক, জাহাঙ্গীর হোসেন, খোকন ও হামজা।
ভুক্তভোগী ওই নারীর ভাই জানান, সমাজপতিদের চাপে এবং বোনের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমি সব মেনে নিয়েছি। কিন্তু আজো টাকা দেয়া হয়নি।
শালিসকারী আব্বাস হোসেন ও মাসুদ হোসেন বলেন, ঘটনাটি গ্রাম্য সালিশে বসে মিটিয়ে দেয়া হয়েছে। সভায় সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই টাকা থেকে মেয়ে পক্ষ সাংবাদিক, পুলিশসহ সব কিছু মিটাবে। আসামিপক্ষ শুধুমাত্র জরিমানার টাকা দেবে। এভাবেই লিখিত করে নেয়া হয়েছে। তবে টাকা এখনও মেয়ে পক্ষকে দেয়া হয়নি। এর জন্য অভিযুক্ত পক্ষ ১০ দিন সময় নিয়েছে। ধর্ষণ ঘটনার বিচার গ্রাম্য সালিশে করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্ন তারা বলেন অবশ্যই পারি। আমরা না পারলে কারা পারবে। তারা বলেন, বাদী যদি অভিযোগ না করেন তাহলে আর সমস্যা কি।
এ বিষয় কোটচাঁদপুর মডেল থানার অফিসার সৈয়দ আল মামুন বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছিলাম। আমি সাফদারপুর পুলিশ ফাঁড়ির আই সি বিল্লালকে পাঠিয়েছিলাম। তারা কথা দিয়ে ছিল থানায় আসবে। তবে এখনো পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি। এ ধরনের ঘটনা গ্রাম্য সালিশে মেটাতে পারে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ধর্ষণ ঘটনার শালিস গ্রাম্যভাবে করার কোন এখতিয়ার আইনত নেই।