চৌগাছা সংবাদদাতা
যশোরের চৌগাছায় ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, জরিমানা এবং ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশে রূপ নেয়। পরে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দেশে প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত এবং ২ কোটি মানুষের জীবিকা এর ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া ইটভাটা মালিকরা ব্যাংক থেকে নেয়া প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ঋণের দায়ে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে জিগজ্যাগ ভাটাগুলো বন্ধ হলে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যয় নেমে আসবে।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সরকার নির্দেশিত জিগজ্যাগ প্রযুক্তির ইটভাটা পরিবেশবান্ধব, জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং টেকসই। গবেষণা অনুযায়ী, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ইটভাটা থেকে বায়ুদূষণ মাত্র ৫-১০% হয়েছে, যা পূর্বের ৫৮% থেকে অনেক কম। অথচ, কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে জিগজ্যাগ ইটভাটাগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত হতে পারছে না।
স্মারকলিপি প্রদান ও বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন যশোর জেলা বিএনপির সদস্য ও চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, ইটভাটা মালিক সমিতির সদস্য জহুরুল ইসলাম, ইটভাটা মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম সাইফুর রহমান বাবুল, চৌগাছা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি তৌহিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক চৌগাছা পৌর বিএনপির সেক্রেটারি আব্দুল হালিম চঞ্চল, সিংহঝুলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মল্লিক, রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় উপজেলার সকল ইটভাটার মালিক এবং বিভিন্ন ইটভাটার শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে জিগজাগ ইটভাটার লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পেতে বাধাগ্রস্ত আইনের সংশোধন, মোবাইল কোর্টের হয়রানি বন্ধ, সরকারি আর্থিক ক্ষতিপূরণ ছাড়া কোনো ইটভাটা বন্ধ না করা, মাটি কাটার অনুমতিপত্রের বিধান বাতিল, লাইসেন্স নবায়নে ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা, ইটভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রণয়নের দাবি তোলেন তারা।
উপজেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে এসব দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে বড় পরিসরে কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা ইসলাম স্মারকলিপিটি গ্রহণ করে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, উপজেলার এতগুলো ইটভাটার মধ্যে শুধুমাত্র ঐশী মল্লিক ব্রিকস এবং কে এস ব্রিকসের পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ইটভাটা চালানোর অনুমতি এবং সরকারি নথিভুক্তি ও ব্যবসায়িক লাইসেন্স রয়েছে।