চৌগাছা প্রতিনিধি
‘স্বাদে সেরা, গন্ধে ভরা খেজুর গুড়ে মনোহরা’ এই প্রতিপাদ্যে যশোরের চৌগাছায় খেজুরের গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে দ্বিতীয়বারের মত উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গুড়ের মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল সকালে জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার এই মেলার উদ্বোধন করেন। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় গাছিদের নিয়ে গতকাল থেকে উপজেলা চত্বরে তিন দিনব্যাপি এই গুড়ের মেলা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বুধবার এ মেলা শেষ হবে।
চৌগাছা উপজেলা চত্বরের বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত গুড় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, যশোরের ব্রান্ডপণ্য খেজুর রসের গুড় জাতীয় অর্থনীতির একটি সম্ভাবনাময় খাত হয়ে উঠতে পারে। গুড় মেলা সম্পর্কে আমার ধারণা ছিলো না। গুড়ের মেলায় এসে আমি অভিভূত।
তিনি বলেন, গাছ প্রস্তুত থেকে গুড় তৈরি পর্যন্ত যে ধাপ গুলো রয়েছে তা যশোরে ঐতিহ্যবাহী প্রসিদ্ধ একটি শিল্প। এ প্রক্রিয়াটিতে যদি আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায়, তাহলে কাজটি আরো সহজ হবে। এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে খেজুর গাছ রক্ষার বিকল্প নেই। গাছের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য উপজেলার সকল রাস্তা, নদীর ধার ও খাস জমিতে খেজুর গাছ রোপণের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। গত বছর উপজেলায় ৫০ লাখ খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। সেগুলো রক্ষাণাবেক্ষণের দায়িত্ব এই উপজেলার মানুষের।
তিনি আরও বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারলে গাছ প্রস্তুত ও রস সংগ্রহের কাজ কষ্টসাধ্য থাকবে না। ফলে চাষিরা এই পেশা থেকে সরে যাবে না বরং অন্যরা আগ্রহী হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশ বিদেশে খাঁটি গুড়ের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে যারা এই পেশায় জড়িত রয়েছে উপজেলা প্রশাসন ও ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারের যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান মধু, উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান, পৌর মেয়র নুর উদ্দীন আল মামুন হিমেল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হোসাইন প্রমুখ।
এসময় উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, ১১ টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, সংবাদকর্মী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ গাছিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য বক্তারা বলেন, যশোরের খেঁজুর রস ও গুড়ের ঐতিহ্য শতশত বছরের পুরাতন। কালের বিবর্তনে যশোর জেলাসহ চৌগাছার খেঁজুর গুড়ের ঐতিহ্য আজ বিলুপ্তির পথে। খেঁজুর গুড়ের সেই পুরোনো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজারে গুড়ের চাহিদা বাড়াতে উপজেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান বক্তারা। মেলায় গাছিরা তাদের উৎপাদিত নির্ভেজাল গুড় বিক্রির জন্য হাজির হয়েছেন।
মেলায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় ছিল রস জ্বালানোর পাত্র তাপাল থেকে খেঁজুর গাছের পাতা দিয়ে গরম গরম গুড় খাওয়া। গুড় খেতে খেতে অনেকে বলেন সেই শৈশব আর কৈশরের দিনগুলিতে জালই (মাটির তৈরি পাত্র) আর তাপাল (টিনের তৈরি পাত্র) থেকে খেঁজুর পাতা দিয়ে গরম গরম গুড় খেয়েছি আজ আবার খেলাম।
গাছিরা জানান, খেঁজুর গাছ নিধন বন্ধ করলে গুড় উৎপাদন বাড়বে। এছাড়া প্রতিবছর অন্যান্য গাছের সাথে খেঁজুর গাছ রোপন করার জন্য সরকারি সহায়তা করা প্রয়োজন।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি গুড় মেলার স্টল পরিদর্শন করেন।
শিরোনাম:
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়
- ‘জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসায় অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না’
- পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প কোচ সংকটে শিগগিরই চালু হচ্ছে না ট্রেন চলাচল
- শব্দ থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী; যশোরে তিনদিনের নাট্য উৎসব হবে
- অভয়নগরে রবিউল হত্যা ওয়াহিদুলের রিমান্ড মঞ্জুর
- যশোর চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মিজান খান ও সম্পাদক সোহান নির্বাচিত
- কেশবপুরে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কুরআন ধরানো অনুষ্ঠান ও পরিচিত সভা