# ৩২ মণ মাছের ২০ মণ উধাও
# ১২ মণের দাম ৩৬ হাজার টাকা পেল চালক
# আটক একজনকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালামের অনুসারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের মালিকানাধীন পিকআপ ভর্তি ৩২ মণ মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী পিকআপ ভর্তি মাছ লুট করে। সেই মাছ দুপুর ২টার দিকে মণিরামপুর আড়তে বিক্রির সময় থানা পুলিশ মাছসহ পিকআপ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ অভিযুক্তদের একজন তাইফুর রহমান তাইমকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে মণিরামপুর থানা পুলিশের দাবি, চৌগাছা থানার ওসির ফোন পেয়ে তারা মণিরামপুর বাজারের মাছের আড়ৎ থেকে পিকআপসহ মাছ উদ্ধার করেছে। পরে আড়তে ১২ মণ মাছ বিক্রি করে ৩৬ হাজার টাকা গাড়ির চালকের হেফাজতে দেয়া হয়েছে। এ সময় কাউকে আটক করা হয়নি।

চৌগাছা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম অভিযোগ করে বলেন, চৌগাছার সিংহঝুলি ইউনিয়নের ডায়নার বিলে ও বেড়গবিন্দপুর বাঁওড়ে আমরা মাছ চাষ করি। সোমবার সকাল থেকে মাছ ধরে বিক্রির জন্য পিকআপে তোলা হচ্ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পিকআপ ভর্তি করার পর স্থানীয় রাসেদ, ইকবাল, মিঠু, তাইম, দুলাল, আলম, বুড়ো কলু, শাহিনসহ ২০-২৫ জন মাছভর্তি পিকআপ জোর করে নিয়ে যায়। পিকআপ ছিনতাইকারীরা চৌগাছা থানা বিএনপির সভাপতি এমএ সালামের অনুসারী।

তিনি আরও বলেন, ছিনতাইকারীরা মাছ নিয়ে মণিরামপুর আড়তে বিক্রি করছিল। আমি ঘটনাটি চৌগাছা থানা পুলিশকে জানানোর পর তাদের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে মণিরামপুর থানা পুলিশ মাছের পিকআপসহ তাইমকে আটক করে। পরে তাইমকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। পিকআপে দুই লাখ টাকার উপরে মাছ ছিল। পুলিশ পিকআপ উদ্ধারের পর আমার সাথে কথা বলেছে। পরে মণিরামপুর বাজারের দুই আড়তে মাছ বিক্রি করেছে। দুই লাখ টাকার মধ্যে আমার গাড়ি চালক মাত্র ৩৬ হাজার টাকার বুঝ পেয়েছে। বাকি টাকার খবর নেই।

মণিরামপুর থানার উপপরিদর্শক অমিত দাস বলেন, ‘চৌগাছার কাশেম চেয়ারম্যানের মাছ স্থানীয় একটা গ্রুপ নিয়ে নেয়। সেই মাছ চৌগাছা ও ঝিকরগাছা থানা পুলিশ চেষ্টা করে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে চৌগাছা থানা থেকে আমাদের থানাকে জানালে আমরা স্থানীয় আড়ৎ থেকে মাছ উদ্ধার করি। পরে মাছ স্থানীয় আড়তে ৩৬ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে টাকা চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক নিয়ে গেছে। এসআই অমিত বলেন, মাছ মণিরামপুর বাজারে আসার পর তা কেনা নিয়ে দুই আড়ৎ মালিকের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে মাছ দুই আড়তে সমানভাবে ভাগ করে বিক্রি করা হয়েছে।’

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘মাছ চুরি বা লুটের কোন ঘটনা হয়নি। কাশেম চেয়ারম্যান মাছ ধরে নিজের লোকজন দিয়ে মণিরামপুরে আড়তে পাঠিয়েছে। পরে চেয়ারম্যানের লোক মাছ বিক্রি করে টাকা নিয়ে গেছে। চৌগাছা থানার ওসি আমাকে ফোনে জানিয়েছেন, কাশেম চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় বিএনপির লোকজনের বিরুদ্ধে মাছ লুটের মিথ্যে অভিযোগ দেন। আমরা মূল ঘটনা জানার জন্য কাজ করেছি। চেয়ারম্যান কাশেমের অভিযোগ সত্য না। ওসি আরও বলেন, গাড়ির চালক বলছিল মাছ আনার সময় কারা জানি তাকে ঝামেলা করছিল। বিএনপির কাউকে আমরা পাইনি। কাউকে আটক করা হয়নি।

চৌগাছার থানার ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, ‘মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। কাশেম চেয়ারম্যানের পিকআপের ড্রাইভারই মাছ নিয়ে মণিরামপুর গেছে। পরে বিষয়টি অন্যখাতে নিয়ে গেছে চেয়ারম্যান। অভিযোগ পাইনি; অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে চৌগাছা থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে বাসায় আছি। চৌগাছা থানার ওসির মাধ্যমে চেয়ারম্যানের অভিযোগের ঘটনা জানতে পেরেছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা বিএনপি করে। চেয়ারম্যান ফাল্তু লোক। তার অভিযোগ মিথ্যা।’

Share.
Exit mobile version