স্বাধীন মুহম্মদ আব্দুল্লাহ
যশোর সদর উপজেলার একটি নিভৃত গ্রাম জঙ্গলবাঁধাল। এই গ্রামে ব্যক্তিগত অর্থায়নে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আদলে নির্মাণ করা দৃষ্টিনন্দন মসজিদ। নান্দনিক নির্মাণশৈলী আর মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অবস্থিত মসজিদটি নজর কাড়ছে সবার। মানুষ চাইলে এমন দৃষ্টিনন্দন ধর্মীয় ইবাদত বন্দেগীর প্রতিষ্ঠান নিভৃত গ্রামেও গড়ে তোলা সম্ভব, তার উদাহরণ হতে পারে জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের এই মসজিদটি। জঙ্গলবাঁধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫৬ শতক জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদটি। এখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
জানা যায়, ১৯৯০ সালে জঙ্গলবাঁধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জমিতে এলাকাবাসী ছোট পরিসরে একটি মসজিদ নির্মাণ করে ইবাদত বন্দেগী করে। পরে স্থানীয় লোকজন, ব্যবসায়ী ও এলাকার প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতায় মসজিদটি নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। নতুন করে ২০১৭ সালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আলোকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। নির্মাণ কাজ শেষ করতে সময় লেগে যায় বেশ কয়েক বছর। অবশেষে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি ২০২০ সালে উদ্বোধন করা হয়।
নজরকাড়া স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত মসজিদের নকশা করেছে জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের কৃতি সন্তান বুয়েট থেকে পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার পলাশ খান। মসজিদটি নির্মাণে প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি মাদরাসা। সেখান থেকে কোরআন শিক্ষা নিচ্ছে শিশু-কিশোররা। তাছাড়া মসজিদেও ধর্মীয় গ্রন্থ শেখানো হয়। আশপাশের গ্রাম থেকেও এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন মুসল্লিরা। দূর দুরান্ত থেকে অনেকে দেখতেও আসেন দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ।
জঙ্গলবাঁধাল জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আসলাম শেখ জানান, মানুষ যাতে সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায় করতে পারে তাই দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা হয়। বছরের দুই ঈদের বড় দুই জামায়াত এই মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। আশে পাশে দশ গ্রামে এমন মসজিদ চোখে পড়ে না।
গাইবান্ধা জেলা থেকে আসা মুসল্লি সাব্বির হোসেন বলেন, তার জীবনে অনেক মসজিদ ঘুরে দেখেছেন, নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু জঙ্গলবাঁধালের মত সুন্দর পরিবেশের মসজিদ সচারাচার চোখে পড়েনি।
মসজিদ নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মসজিদ নির্মাণে তার পরিবারসহ এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ, চাকুরিজীবী, প্রবাসীরা আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন। তবে মসজিদ নির্মাণের মোট খরচের বড় একটা অংশ তার পরিবারের লোকজন দান করেছেন। সকলের প্রচেষ্টায়, আন্তরিকতায় সম্পূর্ণ মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।